ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার লামকাইন গ্রামের দরিদ্র পরিবারের মেয়ে নৌমি আক্তার। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও অদম্য ইচ্ছা ও কঠোর পরিশ্রম করে পড়াশোনা চালিয়েছেন। পরিবারের অসচ্ছলতা মধ্যেও ২০২৩ সালে গফরগাঁওয়ের লামকাইন কে এ গার্লস স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হন। পরে কলেজে পড়ার খরচ নিয়ে অনেকটা শঙ্কায় পড়ে যান। এমতাবস্থায় পাশে দাঁড়ায় মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ফাউন্ডেশন (এমটিবি ফাউন্ডেশন)। প্রথম আলো ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় নৌমি আক্তারকে দুই বছর মেয়াদি শিক্ষাবৃত্তির আওতায় আনা হয়।
এই শিক্ষাবৃত্তির সহায়তায় নৌমি এ বছর আব্দুর রহমান ডিগ্রি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। লিখিত পরীক্ষা শেষ হলেও প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা চলমান। তাঁর স্বপ্ন একজন চিকিৎসক হয়ে দেশের মানুষের সেবা করা। নিজ এলাকার দরিদ্র পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াতে চান নৌমি।
নৌমির বাবা একজন কৃষক, মা গৃহিণী। পরিবারের সদস্য চারজন। নিজেদের জমি বলতে সামান্য ভিটাটুকুই সম্বল। বর্গা জমি নিয়ে চাষাবাদ করে তেমন লাভবান হন না। যার কারণে পড়ালেখার খরচ চালানোটাই কষ্টকর হয়ে পড়ে। শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা হওয়ায় অনেকটা নির্ভার হন তিনি।
নৌমির মা মোছা. সালমা আক্তার বলেন, ‘আমার ছেলেমেয়ে দুজনেই মেধাবী। প্রথম আলো ট্রাস্টকে মন থেকে ধন্যবাদ দিতে চাই তারা আমার মেয়ের লেখাপড়ার জন্য আর্থিক সহযোগিতা করে তার স্বপ্ন পূরণে অবদান রাখছে। সেটা না হলে অভাবের কারণে নৌমির পড়ালেখা সম্ভব ছিল না।
নৌমি তাঁর স্বপ্নের কথা বলতে গিয়ে বলেন, ‘আমি একজন ডাক্তার হতে চাই। এমবিবিএস শেষে বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডার হতে চাই। আমার এলাকার দরিদ্র পরিবারগুলোর সেবা করতে চাই। সেই সঙ্গে দেশে অসহায়, সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে চাই। মানুষকে বিনা মূল্যে চিকিৎসা সেবা দিতে চাই।’
উল্লেখ্য, নারী শিক্ষা ও ক্ষমতায়নে প্রথম আলো ট্রাস্টের শিক্ষাবৃত্তি প্রকল্পে সহায়তা প্রদান করছে এমটিবি ফাউন্ডেশন। এ উপলক্ষে এমটিবি ফাউন্ডেশন ও প্রথম আলো ট্রাস্টের মধ্যে দুই বছর মেয়াদি এক সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়। ২০২৪ সালের ৪ মার্চ মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসির করপোরেট হেড অফিসে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। দুই বছর মেয়াদি এই চুক্তির মধ্য দিয়ে ৫ জন অসচ্ছল মেধাবী নারী শিক্ষার্থীকে শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া শুরু হয়।