স্কুলজীবন থেকে টিউশনি করতাম: জাহিদা আক্তার

ক্লাসের প্রথম দিন খুব ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। আমাকে যখন পুরো ক্লাসের সামনে নিজের সম্পর্কে কিছু বলতে বলা হলো, কিছুই মুখে আসছিল না। অথচ নিজের সম্পর্কে কত কী বলার ছিল আমার। আমি বরিশালের ছয়গ্রামে বড় হয়েছি। বাবা কৃষিকাজ করেন। পরিবারের আর্থিক অবস্থার কারণে ক্লাস নাইনে পড়ার সময় থেকে আমি টিউশনি শুরু করি। এসএসসির টেস্ট পরীক্ষার আগে বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লেন। একদিকে আমার পড়ার চাপ, অন্যদিকে টিউশনি, বাড়িতে বাজার নেই,খুব কঠিন সময় গেছে। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পর তো ভেবেছিলাম, আর পড়ালেখা হবে না। আমার বিয়েও প্রায় ঠিক হয়ে গিয়েছিল। তবে আমার পরিবার কখনোই জোর করে আমার ওপর কিছু চাপিয়ে দেয়নি। এভাবেই জানালেন জাহিদা আক্তার তাঁর সংগ্রামের গল্প। তিনি চট্টগ্রামের এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী ।

পরিবারের প্রথম নারী, যিনি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পৌঁছেছেন, এ রকম ১০ জন শিক্ষার্থীকে প্রতিবছর অর্থনৈতিক সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল প্রথম আলো ট্রাস্ট। এই কার্যক্রমের আওতায় ২০১২ সালে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের (এইউডব্লিউ) সঙ্গে প্রথম আলো ট্রাস্টের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বর্তমানে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের সহায়তায় শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে।

জাহিদা আক্তার আরও বলেন, এইউডব্লিউর পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছি। ক্লাসে সবার সামনে কথা বলতে আর ভয় পাই না। নানা দেশের মেয়েদের সঙ্গে ক্লাস করি, খুব ভালো লাগে। প্রথম আলো ট্রাস্টের দেওয়া বৃত্তি আমাকে আরও সাহস জোগায়।