বড় হয়ে মাসুম শিক্ষক হতে চায়

ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার মদনপুর ইউনিয়ন। এখানে নদীবেষ্টিত এলাকা হওয়ায় চারদিকে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম নৌকা। মদনপুর ইউনিয়ন ভোলার ভেতরেও আর একটা দ্বীপ। তাই এখানকার স্থানীয় মানুষদের শিক্ষা নিয়ে তেমন একটা আগ্রহ নেই। তারা নিজেরা চাষাবাদ, মাছধরা, পশুপালন নিয়েই ব্যস্ত থাকতে চান। এমনকি, সন্তানদের দিয়েও একই কাজ করাতে চান। এদের মধ্যে ব্যতিক্রম সামসুদ্দিন মাঝি। তিনি পেশায় জেলে, বয়স ৪০বছর, ৩ ছেলে মেয়ে। বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন ৫ বছর আগে অস্টম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায়। একমাত্র ছেলে মো. মাসুমকে জেলে বানাতে চান। কয়েক বছর আগে এই ধ্যানধারনা ছিল সামসুদ্দিন মাঝির । কারন হিসাবে তিনি বলেন “আমরা গরীব মানুষ আমাগো মতো মাইনষে পড়ালেহা শিইক্ষা কি করতে পারমু? তাছাড়া, পড়ালেহা করতে গেলেও অনেক টেহা পয়সা খরচ করতে অয়, আমরা এত্ত টেহা কই পামু? এর চেয়ে ছোড কালতনে টেহা কামাইতে পারবো, সংসারের হাল ধরতে পারবো।"

মদনপুরে সরকার থেকে দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্র তিনতলা একটি ভবন তৈরি করা হয়। ওই ভবনে মদনপুর আলোর পাঠশালা নামে প্রথম আলো ট্রাস্ট স্কুলটি পরিচালনা করছে। সরকার বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ করছে। সামিট গ্রুপের সহযোগিতায় প্রথম আলো ট্রাস্ট স্কুলে বিনামূল্যে পড়াসহ নানান ব্যবস্থা করেছে। সম্প্রতি সামসুদ্দিন মাঝির সঙ্গে আবার কথা হয় এই শিক্ষকের সঙ্গে। তিনি আফসোস করলেন এবং নিজের ভুল বুঝতে পারলেন। বললেন "স্যার আসলে আমরা মুক্ষ মানুষ। স্কুল আমার চউখ খুইল্যা দিছে ( সঠিক পথ দেখাতে সাহায্য করেছে)। আমি আমার পোলারে স্কুলে পাঠামু আর ওরে আর আমার লগে কামে নিমু না।" মাসুম নিয়মিত স্কুলে আসে এবং পড়াশোনায় মন দেয়। বড় হয়ে মাসুম শিক্ষক হতে চায়।