মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা নদীভাঙনের শিকার। যমুনার ভাঙনে গত দুই যুগে উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের অনেকখানি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভিটামাটি হারিয়ে এই ইউনিয়নের কেউ সরকারি খাসজমিতে কোনো রকমে ঘর তুলে বাস করছেন। আবার কেউ আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। এ বছর বন্যা ও করোনা মহামারিতে আয়–রোজগার কমে যাওয়ায় ইউনিয়নের অনেকের জীবন চলছে কষ্টে।
বাঘুটিয়া ইউনিয়নের চুয়াডাঙ্গা গ্রামে বাড়ি ছিল নেফাজ উদ্দিনের (৬০)। নদীভাঙনে বসতভিটা হারিয়ে দুই বছর আগে পরিবার-পরিজন নিয়ে পাশের বাসাইল গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে আশ্রয় নেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলো ট্রাস্টের দেওয়া ত্রাণ নিতে এসে নেফাজ উদ্দিন বলেন, ‘চোর-ডাকাত সব নিয়া গ্যালেও বসতবাড়ি থাহে। নদীত ভাঙন আমাগোরে সব নিয়্যা গ্যাছে। পরের জায়গায় আছি। তার মইধ্যে বন্যা ও করোনায় কামাইরোজগার নাই। বড়ই কষ্ট।’
প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে গতকাল বাঘুটিয়া ইউনিয়নের ইসলামপুর গাফুরিয়া দারুচ্ছান্নাহ মাদ্রাসার মাঠে বন্যা ও করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়া ১০০ পরিবারের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়। মানিকগঞ্জের প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যদের আয়োজনে এই ত্রাণ কার্যক্রমে অংশ নেন স্থানীয় বাঘুটিয়া কে এস উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম, সমাজসেবক ইসহাক প্রধান, মানিকগঞ্জ বন্ধুসভার সভাপতি মাহবুব আলম প্রমুখ। ত্রাণ হিসেবে দেওয়া বাগে ছিল চাল, ডাল, তেল, আলু ও লবণ।
ত্রাণ নিতে এসে ইসলামপুর উত্তরপাড়ার আবদুল মতিন (৪৫) বলেন, ‘একটা সময় আমাগো জমিজমা, বাড়িঘর—সবই আছিল। নদীত ভাঙনে আজ আমরা নিঃস্ব। পরের জায়গায় ঘর তুইল্যা পরিবার নিয়্যা থাহি। এই কষ্ট কাকে কইবো?’