মেহেরুন্নেছার (৬০) স্বামী আলতাফ সরদার অসুস্থ হয়ে অনেক বছর ধরে শয্যাশায়ী। দুই ছেলে ভ্যান চালিয়ে সংসার চালান। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে এখন তাঁদের আয়রোজগার বন্ধ। ছেলেদের আয়ে টান পড়ায় পরিবারে খাবারেরও টানাটানি। এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের ছোবলে ছোট্ট টিনের ঘর হেলে পড়েছে, উড়ে গেছে ছাউনির টিন। দিশেহারা অবস্থা মেহেরুন্নেছার।
এমন পরিস্থিতিতে গতকাল বুধবার প্রথম আলো ট্রাস্ট্রের দেওয়া চাল, ডাল, আলু পেয়ে যেন কিছুটা স্বস্তি পেলেন মেহেরুন্নেছা। বলেন, ‘এহন কয়ডা দিন দুগ্গা ভাত মোহে দেতে পারমু। আল্লায় তোমাগো ভাল করুক।’ মেহেরুন্নেছার বাড়ি বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত ভাঙারমুখ গ্রামে।
প্রথম আলো ট্রাস্ট্রের পক্ষ থেকে আম্পানে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে এই ত্রাণ বিতরণে সহায়তা করছেন বন্ধুসভার সদস্যরা। গতকাল এবড়োখেবড়ো সড়ক দিয়ে ত্রাণের গাড়ি নিয়ে বরিশাল নগর থেকে বাবুগঞ্জ উপজেলার বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর ইউনিয়নের আগরপুর আলতাফ মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে পৌঁছাতে প্রায় আড়াই ঘণ্টা লেগে যায় বন্ধুসভার সদস্যদের। ততক্ষণে সূর্য পশ্চিমাকাশে গড়িয়ে পড়েছে। আলতাফ মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠেমেহেরুন্নেছাসহ আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত চর হোগলাপাতিয়া, ভাঙারমুখ, রহিমগঞ্জ, চর ফতেহপুর, ঠাকুর মল্লিক, ইসলামপুর, বারোকানি গ্রামের ৮০টি পরিবারকে ত্রাণসহায়তা দেওয়া হয়। এ ছাড়া গতকাল বরিশাল সদর উপজেলারকালিজিরা ও নবগ্রাম এলাকার আরও ২০টি পরিবারকে খাদ্যসহায়তা দেওয়া হয়েছে।
বাবুগঞ্জের বারোকানি গ্রামের সুজন আকন (৩৫) গ্রামে রিকশা, ভ্যান সারাইয়ের কাজ করেন। ত্রাণ পেয়ে সুজন বলেন, ‘ঘরে চাউল-পদের টানাটানি। ছোট্ট বাচ্চাগুলার মোহের দিক চাইতে পারি না। মোগো কত কষ্ট এইয়্যা কেউ বোজবে না।’
ত্রাণ বিতরণের সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আগরপুর পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) মানবেন্দ্র বালো, বন্ধুসভার বরিশাল জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক নাইমুল ইসলামসহ সদস্যরা।
প্রথম আলো ট্রাস্টের ত্রাণ তহবিলে গতকাল পর্যন্ত জমা পড়েছে ২০ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।
ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতায় আপনিও এগিয়ে আসতে পারেন।
হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ত্রাণ তহবিল
হিসাব নম্বর: ২০৭ ২০০ ১১১৯৪ ; ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা।
সূত্র: প্রথম আলো প্রিন্ট সংস্করণ, ০৪ জুন ২০২০।