প্রথম আলো ট্রাস্ট পাশে না দাঁড়ালে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যেত

মেরিল - প্রথম আলো সাভার সহায়তা তহবিলের শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে স্নাতক (সম্মান) শেষ করেন রাঈমা জাহান
ছবি: প্রথম আলো

ঢাকার সাভারের মেয়ে রাঈমা জাহান। তিন ভাইবোনের মধ্যে সে দ্বিতীয়। বাবা চাকরি করতেন, মা গৃহিনী। এই পর্যন্ত ঠিক ছিল। কিন্তু সবকিছু তছনছ করে দেয় ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা ভবন ধসের ঘটনা। রাঈমার বাবা ইসরাঈল বিশ্বাস ছয় তলায় স্টোর কিপার হিসেবে কাজ করতেন। ওই ঘটনায় তিনি মারা যান। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম বাবা বেঁচে নেই। তবু থেমে থাকেননি। যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পেরেছেন। এই পেরোনোর পেছনে আছে নানা প্রতিবন্ধকতা। মনে সাহস নিয়ে সেই প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করেছেন। গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্সে থেকে স্নাতক শেষ করে বর্তমানে অনলাইনে কাজ করছেন কনটেন্ট রাইটার হিসেবে। পাশাপাশি স্থায়ী একটা চাকরিও খুঁজছেন তিনি।

সাভারের রানা প্লাজা ভবন ধসের ঘটনার প্রথম দিন থেকেই প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে বন্ধুসভা ওষুধ ও সরঞ্জাম নিয়ে ঘটনাস্থল ও হাসপাতালগুলোতে কাজ শুরু করেন। সমাজের সর্বস্তরের মানুষ তহবিলে সহায়তা প্রদান করেন। রানা প্লাজায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের জন্য মেরিল - প্রথম আলো সাভার সহায়তা তহবিল গঠন করা হয়। এই তহবিলের মাধ্যমে তাত্ক্ষণিকভাবে দুর্ঘটনায় পতিত এবং আহত ব্যক্তিদের জন্য খাবার, স্প্রে, অক্সিজেন ও পানি সরবরাহ করা হয়। আহত ব্যক্তিদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিত্সার ব্যবস্থা করা হয়। পরবর্তীতে, গুরুতর আহত ব্যক্তিদের মধ্য থেকে পুনর্বাসনের জন্য ১০১ জনের প্রত্যেককে দেওয়া হয় ১ লাখ টাকা। এ ছাড়া রানা প্লাজায় নিহত ব্যক্তিদের ২০ জনের সন্তানদের শিক্ষা বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। প্রথম শ্রেণি থেকে স্নাতকোত্তর পর্ব পর্যন্ত এই সহায়তা দেওয়া হয়।

রাঈমা জাহান বলেন, ‘বৃত্তির টাকা দিয়েই পড়াশোনা করেছি। রানা প্লাজা ধসে আমার বাবা মারা যাওয়ার পর অর্থ কস্টে ছিলাম। প্রথম আলো ট্রাস্ট সেদিন পাশে না দাঁড়ালে আমার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যেত। এই ঋণ আমি কোনো দিন শোধ করতে পারব না।’