পাবলিক হেলথ সেক্টরে বিশেষজ্ঞ হতে চান জেরিন

প্রথম আলো ট্রাস্ট কর্তৃক আয়োজিত ‘অদ্বিতীয়ার গল্প’ নামক অনলাইন অনুষ্ঠান।

দিলুফা তুজ জেরিন ২০১৫ সালে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন (এইউডব্লিউ) এবং প্রথম আলো ‘ফার্স্ট ফিমেল ইন দ্য ফ্যামিলি স্কলারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ পান। শিক্ষাবৃত্তি পেয়ে পড়াশোনা করেছেন চট্টগ্রামে অবস্থিত এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনে। ২০১৯ সালে স্নাতক শেষ করেন এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ওই বছরই ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির জেমস পি গ্র্যান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথে রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে যোগ দেন। এখন দেশের বাইরে থেকে স্নাতকোত্তর করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। দিলুফার সাফল্যের কথা ওঠে আসে ২৪ মে,২০২১ বিকেল ৪টা ৩০মিনিটে প্রথম আলো ট্রাস্ট কর্তৃক আয়োজিত ‘অদ্বিতীয়ার গল্প’ নামক অনলাইন অনুষ্ঠানে।

জেরিনের অদ্বিতীয়া হওয়ার গল্প জানতে চাইলে বলেন, ‘এটা একটা লম্বা জার্নি। ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিল পাবলিক হেলথ সেক্টরে কাজ করব। তবে সেটা যে রিসার্চ সেক্টরের মাধ্যমে হবে তা ভাবিনি। আমার গ্র্যাজুয়েশন শুরু করার পরে যখন মেজর সাবজেক্ট হিসেবে পাবলিক হেলথ নিয়েছি তখন থেকেই ছোট ছোট স্বপ্নগুলো বড় হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন শেষ করি ২০১৯ সালে। এরপরই রিসার্চ সেক্টরে কাজ শুরু করি। এই সেক্টরে আমার আবস্থান আরও ভালো করব।’

প্রথম আলো ট্রাস্ট কর্তৃক আয়োজিত ‘অদ্বিতীয়ার গল্প’ নামক অনলাইন অনুষ্ঠান।

অভিজ্ঞতা শেয়ার করে বলেন, ‘এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনে পড়ার সুযোগটা আমার জন্য ছিল টার্নিং পয়েন্ট। এইউডব্লিউ মূলত বাংলাদেশের গতানুগতিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ে আলাদা। এখানে প্রায় ১৬টা দেশের মেয়েরা পড়াশোনা করে। ফলে একটা কালচারাল ডাইভার্সিটি ফেইস করতে হয়েছে আমাদের। এতে করে আমাদের গ্রুমিংটা হয়েছে দারুন।

জেরিন এখন কি স্বপ্ন দেখে জানাতে চাইলে জানান, ‘আমার একটা ইচ্ছা ছিল স্নাতক শেষ করে এমন একটা কাজে যোগ দেব যেখানে নিজের কর্মদক্ষতা যাচাই করতে পারব, ফোকাস করতে পারব।এখন আমি আরবান হেলথ নিয়ে কাজ করি। আপাতত স্বপ্ন হলো, পাবলিক হেলথে মাস্টার্স করার জন্য দেশের বাইরে যাব।সুযোগ পেলে পিএইচডি অর্জন করব। সবকিছু ঠিক থাকলে এ বছরের শেষ নাগাদ শুরু করতে পাবর।’

অনেক সময় মনে হয়ে আর পারব না, মন ভেঙে যায় তাঁদের জন্য জেরিন বলেন, ‘কোর্স ওয়ার্ক, ফাইনাল পেপার তৈরির চাপে মনে হয় অনেক কঠিন মনে হয় পড়াশোনা। এ ক্ষেত্রে ক্লাসমেট বা বন্ধুর সঙ্গে আলোচনা করলে অনেক সহজ হয়ে যায়। মনোবল হারানো যাবে না। এইউডব্লিউতে একটা সুবিধা হলো, এখানে সকল শিক্ষার্থীকে পড়াশোনার পাশাপাশি জব করতে হয়। কেউ টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট, কেউ ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করে। ফলে সবার মধ্যে এক ধরনের প্রোফেশনালিজম তৈরি হয়। এটা কর্মক্ষেত্রে কাজে দেয়।’ নতুন অদ্বিতীয়াদের জন্য কোনো পরামর্শ আছে কিনা জানতে চাইলে জেরিন জানান, ‘কখনো নিজের ওপর আস্থা হারানো যাবে না। সব বাধা বিপত্তিতে সাহস রাখতে হবে।’

সব শেষে জেরিন বলেন, ‘প্রথম আলো ট্রাস্টকে জানাই অনেক অনেক ধন্যবাদ আমাকে এ ধরনের একটা প্ল্যাটফর্মে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য। সেই সঙ্গে কৃতজ্ঞতা জানাই আমার পড়াশোনার পথকে মসৃণ করার জন্য।

২০১২ সাল থেকে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন এবং প্রথম আলো ফার্স্ট ফিমেল ইন দ্য ফ্যামিলি স্কলারশিপ অ্যাওয়ার্ড নামে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান শুরু করে। প্রতিবছর পরিবারের প্রথম নারী অথচ দরিদ্র, যিনি উচ্চতর শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সমাজ গঠনে আগ্রহী, এ রকম ১০ জনকে ট্রান্সকম গ্রুপের সহায়তায় এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন এ শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া শুরু করে। ট্রান্সকমের সহায়তায় ২০১৬ সাল পর্যন্ত ৪২ জন শিক্ষার্থী এই বৃত্তি পেয়েছেন। ২০১৭ সাল থেকে আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেড এই শিক্ষাবৃত্তির দায়িত্ব নেয়। নামকরণ করা হয়েছে অদ্বিতীয়া। আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের সহায়তায় ৩৬ জনসহ এ পর্যন্ত মোট ৭৮ জন শিক্ষার্থী এই বৃত্তি পেয়েছেন। এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনও তাঁদের আবাসন, টিউশন ফি সুবিধাসহ নানা সুযোগ দেয়।

অনুষ্ঠানটি একযোগে সম্প্রচারিত হয় প্রথম আলোর ইউটিউব চ্যানেল, প্রথম আলোর ফেসবুক, প্রথম আলো এবং প্রথম আলো ট্রাস্টের ফেসবুক থেকে। সঞ্চালনা করেন প্রথম আলো ট্রাস্টের সমন্বয়ক মাহবুবা সুলতানা।