গিনি বেগম তাঁর ৪৫ বছরের জীবনে এত দীর্ঘ সময় ধরে এত কষ্ট আগে কখনো করেননি। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের চাকলেশ্বর গ্রামের এই নারীর স্বামী মারা গেছেন প্রায় ১০ বছর আগে। স্বামীর ভিটায় থেকে মানুষের বাড়িতে কাজ করে সন্তানদের বড় করছিলেন। করোনাকালে বন্যার মধ্যে হঠাৎ করেই সব যেন হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। কাজ হারান তিনি, বন্যায় বাড়িটাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখন নিজের ও ছেলেমেয়ের খাবারই জোটাতে পারছেন না।
গত শনিবার প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে দেওয়া ত্রাণ হাতে পেয়ে গিনি বেগম বলেন, ‘আমার দুইডা ম্যায়া আর একটা পোলা। পোলাডাই বড়। ছুট্ট থুয়্যা ওগো বাপে মরছে। আমি মাইনষের বাড়ি কাম কইর্যা চলতাম, এহন সবই বন্ধ। বন্যা অইছে থিকা খায়্যা না–খায়্যা রইছি। খুবই কষ্ট। খালি দিন গুনি, কবে যে আসান অইব।’
এ বছর বন্যার কারণে মির্জাপুরের প্রায় দুই লাখ মানুষ পানিবন্দী ও আট শতাধিক বাড়ি পানিতে নিমজ্জিত হয়। দরিদ্র মানুষেরা করোনার পর বন্যায় একেবারে কর্মহীন হয়ে আছেন। এখনো মির্জাপুরের বিভিন্ন রাস্তা পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আছে। অধিকাংশ আবাদি জমি পানির নীচে। স্থানীয় লোকজনের নৌকায় চলাচল করতে হয়। খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে পরিবারগুলোতে।
এমন পরিস্থিতিতে শনিবার প্রথম আলোর মির্জাপুর বন্ধুসভার সদস্যরা নৌকা নিয়ে চারটি গ্রামের ১০০ পরিবারকে প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে ত্রাণ পৌঁছে দেন। ত্রাণ কার্যক্রমে অংশ নেন মির্জাপুর বন্ধুসভার সভাপতি হাবেল মৃধা, সাবেক সভাপতি মনজুর কাদের প্রমুখ। ত্রাণ হিসেবে দেওয়া প্যাকেটে ছিল চাল, ডাল, আলু, তেল ও লবণ।