দমদমিয়া আলোর পাঠশালার কারণে শিক্ষার্থীরা স্কুলমুখী হয়েছে

প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে ও সার্মিট গ্রুপের সহযোগিতায় দমদমিয়া আলোর পাঠশালার ১৯৯ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়।

সামিট গ্রুপের আর্থিক সহায়তায় প্রথম আলো ট্রাস্ট আলোর পাঠশালা নামে ৬ টি স্কুল পরিচালনা করছে। সম্প্রতি স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কক্সবাজারের টেকনাফে দমদমিয়া আলোর পাঠশালা স্কুলে অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সমাবেশে প্রায় দেড় শতাধিক মা ও অভিভাবক উপস্থিত ছিলেন।

অভিভাবক রশিদা বেগম বলেন, নিজ বাড়িতে বসেই যেন শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করতে পারে সে জন্য শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পড়াশোনার খোঁজ খবর নিয়েছেন।

কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার হৃীলা এলাকায় দমদমিয়া গ্রাম। বিজিবি ক্যাম্পের কাছে । নাফ নদীর এক পাশে মিয়ানমার সীমান্ত । অন্য পাশে বাংলাদেশ । এ গ্রামে প্রায় ৮ হাজার মানুষের বসবাস। এই গ্রামের শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো বিদ্যালয় নেই। পরবর্তী সময়ে স্থানীয় দুই সহোদর বনি আমিন ও ছৈয়দুল আমিন বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য ৪০ শতক জমি দান করেন। গ্রামবাসীর উদ্যোগে ১৯৯৪ সালে স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়। শুরুতেই ছাত্রসংখ্যা কম ছিল। ছাপড়ার ঘরে স্কুলের কার্যক্রম দেখে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পক্ষ একটি পাকা একতলা বিল্ডিং করে দেয়। ৪টি রুম ও তিনটি টয়লেট রয়েছে। সামনে একটি খেলার মাঠও রয়েছে। আর্থিক সমস্যার কারণে স্কুলটি প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। ২০২০ সালে প্রথম আলো ট্রাস্ট স্কুলটির দায়িত্ব নেয়। তখন শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল মাত্র ৬৪ জন ও শিক্ষক ছিলেন মাত্র ২জন। বর্তমানে স্কুলের ১৯০জন শিক্ষার্থী ও পাঁচজন শিক্ষক রয়েছেন।

করোনা মহামারির আগে শিক্ষার্থীদের পিটি ক্লাসের ছবি।

অভিভাবক জুবাইদা আখতার বলেন, করোনাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের পরিবারের মধ্যে তিন দফায় খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। এলাকার শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার পথ সুগম করে দেওয়ার পাশাপাশি বিনা বেতনে লেখাপড়ার সুযোগ করে দিয়েছে প্রথম আলো ট্রাস্ট ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন-স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফরিদুল আলম, প্রথম আলোর টেকনাফ প্রতিনিধি গিয়াস উদ্দিন, তাজাউল আহমদ, সাংবাদিক আমান উল্লাহ কবির, স্কুলের দাতা সদস্য বনি আমিনের ছেলে মোহাম্মদ ইউনুস, মোহাম্মদ আয়ুব, স্কুলের প্রধান শিক্ষক বাবুল ইসলামসহ অভিভাবকরা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সহকারী শিক্ষক সৈয়দ নুর।

আলোর পাঠশালার প্রধান শিক্ষক বাবুল ইসলাম বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ রুটিন তৈরি করে শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পড়া বুঝিয়ে দিয়ে আসছেন। এতে শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষকের যোগাযোগ বাড়ছে। আবার শিক্ষার্থীরা তাদের বাড়িতে বসে বিষয়ভিত্তিক সমস্যার সমাধান করতে পারছে।

স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফরিদুল আলম জানান, ‘ছেলেরা পড়াশোনা বাদ দিয়ে সেন্ট মার্টিনগামী পর্যটকদের মাল টানা বা কুলির কাজ করত। এখন তারা স্কুলমুখী হয়েছে।’