জোয়ারে ধুয়ে যাচ্ছে জনপদ, জীবিকা

প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে ভোলার দক্ষিণ রাজাপুর ও কন্দ্রকপুর গ্রামের দুর্গত মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল ভোলার দক্ষিণ রাজাপুরের পূর্ব বাঁধে
ছবি: প্রথম আলো

ঘূর্ণিঝড় আম্পানের পর থেকেই অস্বাভাবিক জোয়ার। অমাবস্যা, পূর্ণিমায় বাঁধ উপচে গ্রামগুলোতে পানি ঢুকছে। বাঁধের বাইরের এলাকা ও চরাঞ্চলগুলোর অবস্থা আরও খারাপ। ভোলার সদর উপজেলার উত্তরে দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের নুরুল ইসলামের উঠানে এখনো জোয়ারের পানি ওঠে। ঘরের ভিটির বেশির ভাগ মাটি ধুয়ে গেছে। ঘরের খুঁটি আলগা হয়ে গেছে। বেড়া ভেঙে পড়েছে।

স্থানীয়রা জানান, রাজাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ রাজাপুর ও কন্দ্রকপুর গ্রামের (তিনটি ওয়ার্ডে) কয়েক শ পরিবার জোয়ার-জলোচ্ছ্বাস নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাইরে। প্রায় পাঁচ মাস ধরে অমাবস্যা ও পূর্ণিমায় পরিবারগুলোর বাড়িতে দিনে দুবার করে পানি উঠছে। ঘরের ভিটা, সড়ক ও খেতের মাটি ধুয়ে গেছে। বড় বড় গর্ত হয়ে গাছগুলোর শিকড় বেরিয়ে আছে।

গত সোমবার প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে রাজাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ রাজাপুর ও কন্দ্রকপুর গ্রামের ১০০ দুর্দশাগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হয়।

ত্রাণ পেয়ে নুরুল ইসলাম বলেন, করোনাকালে আয় একেবারেই কমেছে। মেঘনায় মাছও কম। এ অবস্থায় সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে। এমনই অর্থাভাব যে খাবার জোগাড় করাই কষ্ট, ঘর মেরামতের চিন্তাই করতে পারছেন না। তার ওপর মেঘনাও কাছে এগিয়ে আসছে।

ভোলার প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যরা দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের পূর্বে বাঁধের ব্লকের ওপর এই ত্রাণ বিতরণ করেন। ত্রাণ কার্যক্রমে অংশ নেন মদনপুর আলোর পাঠশালার শিক্ষক হেলাল উদ্দিন, দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের পল্লিচিকিৎসক মির হোসেন প্রমুখ।

ত্রাণ নিতে আসা দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের কামাল চৌকিদার, আমির হোসেন, শাহে আলম মৃধা, মো. হানিফ, কন্দ্রকপুর গ্রামের নুরজাহান, আনারজান বিবি, আব্বাস সিকদারসহ অন্যরা জানান, এমনিতেই সবার আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ। তার ওপর এই দুর্যোগ। পুকুরের মাছ, বসতবাড়ির মালামাল, বীজ, চালসহ অনেক কিছুই জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে। প্রায় সব বাড়ির শৌচাগার জোয়ারে ধুয়ে ভেঙে গেছে। লোকজন এখন ভাঙা ও উন্মুক্ত স্থানে প্রয়োজনীয়তা সারছেন। জোয়ারে ভাসছে বর্জ্য।

স্থানীয় মাহমুদ আলী বলেন, ‘জোয়ারেসসুম একেট্টা দমা (ঢেউ) যেই ঘরে বাড়ে মারছে, ঘরের বেড়া ছুডাই লোই গেছে।’

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতায় আপনিও এগিয়ে আসতে পারেন।

হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ত্রাণ তহবিল

হিসাব নম্বর: ২০৭ ২০০ ১১১৯৪

ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা।