গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক ইউনিয়নে স্ত্রী-দুই সন্তানসহ সাতজনের সংসার জামাল উদ্দিনের (৫৬)। জামাল উদ্দিনের সংসারটি ছিল মূলত কৃষিনির্ভর। করোনার সময় বড় ছেলেটা বেকার হয়ে বাবার কৃষিকাজে যুক্ত হন। এর মধ্যইে বানের পানিতে ভেসেছে ফসলের খেত। ঘরে আর জমানো টাকাও নেই। এখন দুই বেলা ঠিকমতো খাবারই জুটছে না পরিবারটির।
গতকাল সোমবার প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক ইউনিয়নের কালিয়াদহ, মজুদ বাঁশতলী, বড়ইবাড়ি, দিঘীবাড়ি ও রাজাবাড়ী গ্রামের বানভাসি ১০০টি পরিবারকে ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। জামাল উদ্দিনও এসেছিলেন ত্রাণ নিতে। মজুদ বাঁশতলী গ্রামে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে গাজীপুর বন্ধুসভার সদস্যদের সঙ্গে অংশ নেন মৌচাক ইউনয়িন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন, ইউপি সদস্য আরিফুল ইসলাম, মহিলা ইউপি সদস্য সালমা আক্তার প্রমুখ।
ত্রাণ নিতে আসা কালিয়াদহ গ্রামের আফসার উদ্দিন বলেন, ‘বন্যার লাইগা কাজকাম নাই, ঘরে খাওনই আনা পারতাছি না। পোলাডাও কোনা কাম পাইতাছে না।’
স্থানীয় প্রশাসন সূত্র জানায়, এবারের বন্যায় কালিয়াকৈরের ১৮২টি গ্রামের প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও দুর্ভোগ কমেনি।
গ্রামবাসী জানান, আড়াই মাস ধরে বানের পানিতে ভাসছেন তাঁরা। কর্মহীন মানুষের ঘরে ঘরে খাবারের অভাব দেখা দিয়েছে।
মজুদ বাঁশতলী গ্রামের শহর বানু বলেন, ‘বন্যার লাইগা পুলাডা কামে যাইতে পারতাছে না। অনেক কষ্ট কইরা সংসারটা চলতাছে। পুলাডার লাইগা একটা কাম পাইলে ভালো হইতো।’
একই গ্রামের বানেছা বেগমের তিন ছেলেমেয়ের মধ্যে দুজন স্কুলের শিক্ষার্থী। কৃষিশ্রমিক স্বামী ও রাজমিস্ত্রী বড় ছেলের আয়েই সংসারটা চলে। করোনা ও বন্যার মধ্যে বাবা–ছেলে দুজনেই বেকার। বানেছা বলেন, ‘আমাগো জীবন এহন পানির ওপর ভাইসা আছে। ঘরে খাওন নাই।’ ত্রাণ পেয়ে কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
প্রথম আলোর ত্রাণ তহবিলে গত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত মোট জমা পড়েছে ৩৪ লাখ ২৪ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত মোট খরচ ২৮ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। গতকাল নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন দুই লাখ টাকা এবং আরেকজন এক লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন।বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতায় আপনিও এগিয়ে আসতে পারেন।
হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ত্রাণ তহবিল
হিসাব নম্বর: ২০৭ ২০০ ১১১৯৪
ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা।