‘কয় দিন খাবারের চিন্তা করা নাগব্যার নোয়ায়’

গাইবান্ধার বন্যার্তদের মধ্যে প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়। গতকাল সদরের গিদারি ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে।ছবি: প্রথম আলো

মাইদুল ইসলামের (৫২) দুটি পা-ই অচল। চলাফেরায় হুইলচেয়ারই ভরসা। বাড়ি গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারি ইউনিয়নের বাগুরিয়া গ্রামে। তিন শতক বসতভিটা ছাড়া কোনো সহায়-সম্পদ নেই। তাঁর দুই ছেলে—বড় ছেলে তৌহিদের বয়স পাঁচ বছর, ছোট ছেলে হোসেন মিয়া (১) শারীরিক প্রতিবন্ধী। স্ত্রী মাসুদা বেগম দিনমজুরের কাজ করেন। তাঁর আয়েই চলে সংসার। কিন্তু গ্রামে এখন কোনো কাজ নেই। ধারদেনা ও আশপাশের মানুষের সহায়তায় দিন চলছে তাঁদের।

মাইদুল গতকাল শনিবার হুইলচেয়ারে ভর করে প্রথম আলো ট্রাস্টের ত্রাণ নিতে আসেন গিদারি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয় চত্বরে। ত্রাণ পেয়ে তিনি বললেন, ‘হামরা পঙ্গু মানুষ। কাম করব্যার পাইনে। হামার বউ সোংসার চলায়। অর কামও বনদো। করোনার পর থাকি কসটোত আছি। তার মদ্দে বান চলি গেলো। হামার ঘরে (আমার) আগোত ইলিপ পাওয়ার কতা। কিনতো দুই বিপোদোত (করোনা ও বন্যা) কোনো ইলিপ পানো না। আচকে তোমারঘরে আলোর ইলিপ পায়া ভালো হলো। কয় দিন খাবারের চিন্তা করা নাগব্যার নোয়ায়।’

গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারি ইউপি কার্যালয় চত্বরে গতকাল সকালে ইউনিয়নের বাগুরিয়া, আনালেরছড়া, নয়াগ্রাম ও ডাঙ্গারঘাট গ্রামের ১০০ জন বন্যার্ত নারী–পুরুষের মধ্যে প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। বিতরণ করা ত্রাণের প্যাকেটে ছিল চাল, ডাল, লবণ ও আলু। গিদারি ইউপি চেয়ারম্যান হারুণ-অর-রশিদ ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারি ইউপি কার্যালয় চত্বরে গতকাল সকালে ইউনিয়নের বাগুরিয়া, আনালেরছড়া, নয়াগ্রাম ও ডাঙ্গারঘাট গ্রামের ১০০ জন বন্যার্ত নারী–পুরুষের মধ্যে প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। বিতরণ করা ত্রাণের প্যাকেটে ছিল চাল, ডাল, লবণ ও আলু। গিদারি ইউপি চেয়ারম্যান হারুণ-অর-রশিদ ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। ত্রাণ বিতরণে সহায়তা করেন প্রথম আলো গাইবান্ধা বন্ধুসভার সদস্যরা। ত্রাণ বিতরণের সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গাইবান্ধা প্রথম আলো বন্ধুসভার সাবেক সভাপতি আবদুর রব, বর্তমান সহসভাপতি রুমা শাহীন, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সরকার।

ইউপি চেয়ারম্যান হারুণ-অর-রশিদ বলেন, তাঁর ইউনিয়নের ৮০ শতাংশ মানুষই দরিদ্র এবং নদীভাঙনকবলিত। সবাইকে সরকারি ত্রাণ দেওয়া সম্ভব হয় না। প্রথম আলো ট্রাস্টের ত্রাণ পেয়ে দরিদ্র মানুষের খুব উপকার হলো।

হামরা পঙ্গু মানুষ। কাম করব্যার পাইনে। হামার বউ সোংসার চলায়। অর কামও বনদো। করোনার পর থাকি কসটোত আছি। তার মদ্দে বান চলি গেলো। হামার ঘরে (আমার) আগোত ইলিপ পাওয়ার কতা। কিনতো দুই বিপোদোত (করোনা ও বন্যা) কোনো ইলিপ পানো না। আচকে তোমারঘরে আলোর ইলিপ পায়া ভালো হলো। কয় দিন খাবারের চিন্তা করা নাগব্যার নোয়ায়।
প্রথম আলো ট্রাস্টের ত্রাণ নিতে আসেন গিদারি ইউনিয়ন পরিষদের মাইদুল

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহযোগিতায় আপনিও এগিয়ে আসতে পারেন।

হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ত্রাণ তহবিল

হিসাব নম্বর: ২০৭ ২০০ ১১১৯৪

ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা।