কে দোষী, ‘চাড়ালকাটা’ না কপাল

প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে নীলফামারীতে বানভাসি মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। গতকাল জলঢাকা উপজেলার খুঁটামারা ইউনিয়নের হরিশচন্দ্র পাঠ সাইফুন মাঠে
ছবি: প্রথম আলো

করোনাকালে কর্মহীনতায় আয় কমে যাওয়ার কষ্ট তো আছেই, তার ওপর অতিবৃষ্টি ও বন্যায় বিপর্যস্ত নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার খুটামারা ও মীরগঞ্জ ইউনিয়নের মানুষ। ওই এলাকার চাড়ালকাটা নদীর কূল উপচে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৩০০ পরিবার।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের একজন ৮০ বছরের অভয় চন্দ্র রায়। লাঠিতে ভর দিয়ে গতকাল সোমবার প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে বিতরণ করা ত্রাণ নিতে এসেছিলেন অভয়। বললেন, ‘চাইরদিন ধরি চাড়ালকাটা নদীর বানোত ভাসি ছিনো। হামার ঘর দুয়ার নষ্ট হয়া গেইছে, কাম কাজও করির পাও না।’ ভূমিহীন অভয় চন্দ্রের পরিবারে সদস্য সংখ্যা চারজন। এখন খাবারের কষ্টে পরিবারটি। এই দুর্দশার জন্য অভয়চন্দ্র চাড়ালকাটা নদীকে না নিজের কপালকে দুষবেন, সেটাও ভেবে পান না।

গতকাল দুপুরে খুটামারা ইউনিয়নের হরিশচন্দ্র পাঠ সাইফুন মাঠে এই খাদ্যসহায়তা বিতরণ করেন প্রথম আলো নীলফামারী বন্ধুসভার সদস্যরা। ত্রাণ কার্যক্রমে অংশ নেন নীলফামারী সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান দীপক চক্রবর্তী, শিক্ষক সুধীর রায়, নীলফামারী প্রথম আলো বন্ধুসভার সভাপতি হাতেম আলী, সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় প্রমুখ। খুটামারা ইউনিয়নের হরিশচন্দ্র পাঠ, জেলে পাড়া, সর্দারপাড়া, মাঝাপাড়া, মীরগঞ্জ ইউনিয়নের কালকেউট, হিন্দুপাড়াসহ বিভিন্ন পাড়া মহল্লার এক শ বানভাসির মধ্যে ওই ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়। ত্রাণ হিসেবে দেওয়া হয় চাল, আটা, আলু, ডাল, তেল ও লবণ।

ত্রাণ নিতে আসা জালিয়া পাড়া গ্রামের দিপালী রানী দাস (৬০) বলেন, ‘ছাওয়া পোয়া নিয়া নদীর পারত ধুরা বান্ধি আছিনো। চেয়ারম্যান মেম্বার হামাক দেখে না।’

ত্রাণ নিতে আসা মানুষেরা জানান, চাড়ালকাটা নদী হয়ে আসা ঢলের পানি আর সাম্প্রতিক অবিরাম বর্ষণে কয়েক দফায় প্রায় দুই মাসব্যাপী বন্যায় ওই দুই ইউনিয়নের প্রায় তিন শ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। খেতে কোনো ফসল নেই। ঘরবাড়িও নষ্ট হয়েছে। উপার্জন না থাকায় খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতায় আপনিও এগিয়ে আসতে পারেন।

হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ত্রাণ তহবিল

হিসাব নম্বর: ২০৭ ২০০ ১১১৯৪

ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা।