লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের তিস্তাপারের গ্রাম চর গোকুন্ডা। এ বছরের চার-পাঁচ দফা বন্যায় গ্রামটির ৫৬টি পরিবারের বাড়িভিটা তিস্তা নদীতে বিলীন হয়েছে। এর আগের দুই বছরে আরও শতাধিক পরিবার নদীভাঙনের শিকার হয়েছে। নতুন করে ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো ঠাঁই নিয়েছে আত্মীয়-পরিজনের বাড়িতে, এমনকি রাস্তার ধারেও।
গতকাল রোববার সকালে প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে বানভাসি ১০০ পরিবারের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে নদীভাঙনের শিকার ৫৬টি পরিবারও রয়েছে।
ত্রাণ নিতে এসেছিলেন নদীভাঙনের শিকার চর গোকুন্ডা গ্রামের মতিয়ার রহমান (৬০)। তিনি বলেন, ‘জমিজমা, বাড়ি আছিল। সবই তিস্তাত গেইছে। মানষের বাড়িত থাকি। বয়স হইছে, কাহো কামেও ডাকে না। এ্যালা এটা-সেটা করিয়া জান বাঁচাং।’
তিস্তা নদী থেকে ৫০০ গজ উত্তরে চর গোকুন্ডার আবুল হোসেনের বাড়ির উঠানে গতকাল ত্রাণ বিতরণ করা হয়। ত্রাণ কার্যক্রমে অংশ নেন লালমনিরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) উত্তম কুমার রায়, গোকুন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা, স্থানীয় নাট্যসংগঠক মাখন লাল দাস, প্রথম আলোর লালমনিরহাট বন্ধুসভার সভাপতি শেখ রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আসাদুজ্জামান প্রমুখ। ত্রাণ হিসেবে প্রতিটি পরিবারকে চাল, ডাল, লবণ, তেল ও সাবান দেওয়া হয়।
এ সময় লালমনিরহাট সদরের ইউএনও উত্তম কুমার রায় বলেন, ‘প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে এই ত্রাণসামগ্রী বিতরণকে প্রশংসনীয় বললে কম বলা হবে। অন্যরা যদি এই কাজের ধারা অনুসরণ করেন, তাহলে সেটা হবে সমাজের মানুষ, বিশেষ করে দরিদ্র মানুষের একটা ভরসার জায়গা।’
চর গোকুন্ডার আছমা বেগমের স্বামী মারা গেছেন দেড় যুগ আগে। ছেলেমেয়েদের পৃথক সংসার। নদীর পাড়ে একটা টিনের চালা ছিল আছমার। এবার বন্যায় সেই জমিটাও গেছে নদীতে। চালাটা সরিয়ে বড় মেয়ের বাড়িতে তুলেছেন। আছমা বেগম বলেন, বড় মেয়ের সংসারের অবস্থাও তেমন ভালো নয়। সবারই অভাব।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহযোগিতায় আপনিও এগিয়ে আসতে পারেন।
হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ত্রাণ তহবিল
হিসাব নম্বর: ২০৭ ২০০ ১১১৯৪
ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা।