‘সারা জীবন কষ্ট করলাম। তবে এবারের মতো জীবনে আর এত কষ্ট করি নাই। করোনার মইদ্দে মানুষের হাতে ট্যাহাপয়সা নাই। বন্যায় দুই মাস ধইর্যা খেতখামার পানিতে। কাইজকামও নাই। কীভাবে যে সংসার চলছে, তা আমরা ছাড়া কেউ টের পাইব না।’
বলছিলেন মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার কলিয়া ইউনিয়নের বেকি উলাইল গ্রামের কৃষিশ্রমিক দবির উদ্দিন (৬৫)। গতকাল রোববার প্রথম আলো ট্রাস্টের খাদ্যসহায়তা পেয়ে এই প্রতিক্রিয়া জানান তিনি। দবির উদ্দিন জানান, বন্যা ও করোনা পরিস্থিতিতে প্রায় পাঁচ মাস ধরে বেকার তিনি। এ কারণে তাঁর পাঁচ সদস্যের পরিবারের দিন চলছে চরম সংকটের মধ্য দিয়ে। প্রথম আলো ট্রাস্টের ত্রাণসহায়তা পেয়ে তাঁর খুব উপকার হলো।
সাত বছরের নাতনিসহ খাদ্যসহায়তা নিতে এসেছিলেন তালুকনগর গ্রামের দিনমজুর তফিজ উদ্দিনের স্ত্রী রঙিলা বেগম (৬৫)। ছেলের আয়েই চলে ছয় সদস্যের পরিবার। ত্রাণ পেয়ে রঙিলা বেগম বলেন, ‘পোলাডার সংসার চালাইতে খুব কষ্ট অয়। এই তেরানে কয় দিন চইল্যা যাইব।’
উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২৮ কিলোমিটার দূরে দৌলতপুর উপজেলা। সেখান থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে প্রত্যন্ত কলিয়া ইউনিয়ন। গতকাল ইউনিয়নের তালুকনগর, মুকন্দবাড়ি, আহলিয়া, বেকি উলাইল ও উলাইল গ্রামের ১০০ বন্যার্ত পরিবারকে প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে ত্রাণসহায়তা দেওয়া হয়। প্রথম আলো বন্ধুসভার সহায়তায় স্থানীয় উলাইল মডেল হাইস্কুল মাঠে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। ত্রাণের ব্যাগে ছিল চাল, আলু ও লবণ। ত্রাণ বিতরণে অংশ নেন কলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাকির হোসেন, উলাইল মডেল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আবদুল মালেক, মানিকগঞ্জ বন্ধুসভার সভাপতি মাহবুব আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক হোসেন প্রমুখ।