পাবনার বেড়া উপজেলার হাটুরিয়া-নাকালিয়া ইউনিয়নের পেঁচাকোলা গ্রামের বেশির ভাগ মানুষই বারবার নদীভাঙনের শিকার। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাইরে বলে প্রতিবছরই তাঁতপ্রধান এই গ্রামে বন্যা হানা দেয়। তবে এবারের বন্যায় গ্রামবাসীর ক্ষতি হয়েছে অনেক বেশি। বন্যায় তাঁতঘরসহ বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাঁতযন্ত্রগুলোও হয়ে পড়েছে অকার্যকর। এতে দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের তাঁতশ্রমিকেরা বেকার। অনেকেরই দিন কাটছে খেয়ে না–খেয়ে।
এমন পরিস্থিতিতে গতকাল শনিবার প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে গ্রামের বন্যাকবলিত ১২০ জন মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। দুপুর ১২টার দিকে প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যরা নৌকায় করে পেঁচাকোলা ঘাটে গিয়ে এসব ত্রাণ বিতরণ করেন। ত্রাণের মধ্যে ছিল চাল, ডাল ও সয়াবিন তেল।
ত্রাণ পেয়ে গ্রামের তাঁতশ্রমিক আলাউদ্দিন হোসেন (৪৫) বলেন, ‘করোনার জন্য এমনিতেই তাঁতে কাম খুব কম। এর উপর বন্যায় আমরা এক্কেরে শেষ। বেকার হয়া বইস্যা থাকায় ঘরে চাল-ডাল নাই। এমন কষ্টের সময় কেউ খোঁজ নেয় নাই। কিন্তু প্রথম আলো আইস্যা ঠিকই আমাগরে খোঁজ নিল। এই চাল-ডাল কয়ডা পায়া খুবই উপকার হলো।’
গ্রামের মালেকা বেগমের (৫০) স্বামী নেই। দিনমজুর ছেলেদের সংসারে থাকলেও খুব কষ্টে দিন কাটে তাঁর। ত্রাণ পেয়ে তিনি বলেন, ‘ছাওয়ালগরে (ছেলেদের) আয়-রোজগার নাই। এর উপর বন্যায় বাড়িঘরের ম্যালা ক্ষতি হয়া গেছে। তোমাগরে এই রিলিপ পায়া কয়ডা দিন শান্তিতে থাকা যাবি।’
ওয়াজেদ হোসেন (৬০) একসময় দিনমজুরের কাজ করতেন। তিনি এখন নানা অসুস্থতায় ভুগছেন। তাই কাজ করতে পারেন না। খেয়ে না–খেয়ে দিন কাটছিল তাঁরা। গতকাল ত্রাণ পেয়ে খুব খুশি এই বৃদ্ধ। বললেন, কয়েক দিন তাঁর আর খাবার নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।
ত্রাণ বিতরণে অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেন বেড়া হাইস্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আবদুর রাজ্জাক, পাবনা বন্ধুসভার সহসভাপতি রাকিবুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আনিকা তাসনিম, বেড়া বন্ধুসভার সভাপতি শহীদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক এম আই হাসান।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতায় আপনিও এগিয়ে আসতে পারেন।
হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ত্রাণ তহবিল
হিসাব নম্বর: ২০৭ ২০০ ১১১৯৪
ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা।