সাভারের রানা প্লাজা ধসে মারাত্মকভাবে আহত পোশাক শ্রমিক শিলা বেগমের মেয়ে তানজিলা আক্তার নিপা এবার এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন। তিনি বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া ডিগ্রি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এ ফল করেছেন। এখন নার্সিংয়ে বিএসসি করা জন্য ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
মেরিল-প্রথম আলো সাভার সহায়তা তহবিল থেকে রানা প্লাজায় নিহত ২০ পরিবারের ২০ জন শিক্ষার্থী শিক্ষাবৃত্তি পাচ্ছেন। তানজিলা আক্তার নিপা ওই ২০ জন শিক্ষার্থীর একজন।
তানজিলার মা শিলা রানা প্লাজায় একটি পোশাক কারখানায় জ্যেষ্ঠ অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল দুর্ঘটনার প্রায় ১৮ ঘণ্টা পর শিলা বেগমকে উদ্ধার করেছিলেন উদ্ধারকর্মীরা। শিলা বেগমের স্বামী রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। ২০০৬ সালে মারা গেছেন, যখন মেয়ের বয়স ছিল মাত্র ২ বছর। সংসারে উপার্জনের কেউ ছিলেন না। তখন মেয়েকে নিয়ে সাভার চলে আসেন এবং রানা প্লাজার ৬তলায় ইথারটেক্স লিমিটেডে কাজ নেন। কিন্তু কয়েক মাসের মাথায় দুর্ঘটনার শিকার হন এবং বিমের নিচে চাপা পড়েন তিনি। জরায়ু বের হয়ে গিয়েছিল তাঁর। পরে অপারেশন করে তা ফেলে দেওয়া হয়েছে। কিডনিতেও চাপ খেয়েছেন এবং ডান হাত এখনো অবশ।
এই যখন অবস্থা তখন একমাত্র মেয়ের পড়াশোনা নিয়ে দু:চিন্তার মধ্যে পড়েন শিলা বেগম। অর্থের অভাবে আর পড়াশোনা করাতে পারবেন না জানান। পরে সার্বিক দিক বিবেচনায় নিয়ে প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত মেরিল-প্রথম আলো সাভার সহায়তা তহবিল থেকে নিপাকে দেওয়া হয় শিক্ষাবৃত্তি। এই বৃত্তি সহায়তা নিয়ে পড়াশোনা অব্যাহত রাখেন এবং এই সাফল্য বয়ে আনেন।
শিলা বেগম জানালেন, ‘আপনাদের সহযোগিতায় মেয়ে আমার ভালো ফল করল। এখন ভালো কোথাও ভর্তি করতে পারলে আশা পূর্ণ হবে। আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আপনার নিপার জন্য দোয়া করবেন।’