সাদত স্মৃতি পল্লীতে বয়স্কদের জন্য রয়েছে নানা সেবা
আমার কোন কামাই নাই। এইহানতে যে ট্যাহা পাই তা দিয়ে বাজার কইরা খাই। মাইধ্যে মাইধ্যে (মাঝে-মাঝে) অষইদ (ঔষধ) কিন্নাই ট্যাহা শেষ অইয়া যায়। পরতেক মাসে এই ট্যাহাডা না পাইলে আমার চলা-ফেরা বন্ধ অইয়া যায়তোগা। এহেনতে চিগিসা (চিকিৎসা) পাওয়ার কারণে অষইদ বেশি কিনুন লাগে না।ওপরের কথাগুলো বলছিলেন নরসিংদী রায়পুরা দড়িহাইরমারা গ্রামের বাসিন্ধা আব্দুস সাত্তার । তার বয়স ৭২ বছর।
প্রথম আলো ট্রাস্টের পরিচালনায় সাদত স্মৃতি পল্লী প্রকল্পে আব্দুস সাত্তারের মতো তালিকাভুক্ত ৬০ জন বৃদ্ধ অসহায় মানুষকে প্রতিমাসে এক হাজার টাকা করে বয়স্কভাতা দেওয়া হয়। নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার দড়ি হাইরমারা গ্রামে সাদত স্মৃতি পল্লীর অবস্থান।
বয়স্কভাতা প্রাপ্তিতে প্রকল্প এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা ও বয়স ষাটোর্ধ হতে হয়। বয়স্কভাতায় নাম অন্তভুর্ক্ত হতে ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি জমা দিতে হয়। পরবর্তীতে বাড়ি-ঘর পরিদর্শন করে প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে নতুন নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
প্রতিমাসের বয়স্কভাতা ছাড়াও বছরে দুটি ঈদে বয়স্কদেরকে বয়স্ক ভাতাসহ অতিরিক্ত ৫০০ টাকা করে ঈদ বোনাস প্রদান করা হয়। ঈদুল ফিতরে প্রত্যেক বয়স্ক সেবা প্রাপকদের স্বামী-স্ত্রীদের ২ সেট করে কাপড় (পুরুষের জন্য ২ টি লুঙ্গি ২ টি পাঞ্জাবি সেলাই খরচসহ নারীদের জন্য ২ টি শাড়ি জামা সেলাই খরচসহ) প্রদান করা হয়। রমজান মাসে বয়স্কদের ইফতার সামগ্রী বিতরণ করা হয়। বছরে চার থেকে পাঁচবার বয়স্কদেরকে প্রকল্পে এনে ভাল মানের খাবার খাওয়ানো হয়। ফলের মৌসুমে বিভিন্ন ধরনের ফল ও মিষ্টি বিতরণ করা হয়। কেউ মৃত্যুবরণ করলে তাদের পরিবারকে সান্তনা ও মৃত ব্যক্তির দাফন সংক্রান্ত ব্যয় বহন করা হয়। মৃত ব্যক্তির পরিবর্তে তার স্বামী বা স্ত্রী বেঁচে থাকলে তাদেরকে ভাতা প্রাপ্তিতে অগ্রাধিকার দেয়া হয়। অন্যথায় নতুন সদস্যের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আট থেকে দশ জন সেবা প্রাপকদের বাড়িতে গিয়ে প্রতি মাসেই ভাতা সংক্রান্ত অর্থের যথাযথ ব্যয়ের তথ্য সংগ্রহ করেন। শীতকালে বয়স্কদের শীতবস্ত্র প্রদান করা হয়। বর্তমানে দড়ি হাইরমারা, মনিপুরা, হাইরমারা, সাউদপাড়া, বীরকান্দি, আব্দুল্লাহপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের বয়স্ক লোকেরা প্রকল্পের ভাতা গ্রহণ করে থাকেন।