শিশু-বিকাশ কেন্দ্রে নাচ শিক্ষার ক্লাস শুরু
সাদত স্মৃতি পল্লীতে বিনা মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান ও ওষুধ বিতরণের পাশাপাশি গ্রামের শিশু-কিশোরদের মানসিক বিকাশের লক্ষ্যে বই পড়ার অভ্যাস, ছবি আঁকা, নাচ, গান ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ক ক্লাস নেওয়া হয়। তবে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে প্রায় দেড় বছর বন্ধ ছিল নরসিংদীর দড়ি হাইরমারা গ্রামের সাদত স্মৃতি পল্লীর সকল কার্যক্রম৷ ফলে বন্ধ হয়ে যায় প্রকল্পে শিশুদের আনন্দ ভরা আনাগোনা৷ ওরা হয়ে পড়ে ঘরকুনো৷ স্কুল বন্ধ, শিশু-বিকাশ কেন্দ্র বন্ধ, মক্তব বন্ধ, গণশিক্ষা বন্ধ, খেলা বন্ধ, চারদিকে লকডাউন৷
চারদিকে এই দমবন্ধ পরিস্থিতিতে শিশু-কিশোরেরা হাঁপিয়ে ওঠেছিল৷ সেই পরিস্থিতির অবসান হলো। দীর্ঘ দেড় বছর পর সরকারের নির্দেশে খোলে দেওয়া হলো প্রায় সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান৷ তারই প্রেক্ষিতে সাদত স্মৃতি পল্লীর শিশু-বিকাশ কেন্দ্রটিও খোলে দেওয়া হয়েছে৷ ক্রমান্বয়ে শুরু হতে শুরু করেছে সকল কার্যক্রম। এরই ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার সকালে শিশু-বিকাশে আসতে থাকে শিশু-কিশোরেরা। এইদিন ছিল নাচের প্রশিক্ষণ। প্রথমে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে তারা ক্লাসে প্রবেশ করে৷ শিশু-বিকাশের ক্লাস চলাকালীন সময়ে শিক্ষকসহ সকল শিক্ষার্থীরা মাস্ক পরিধান করে থাকে৷ নাচের ক্লাসও শিক্ষার্থীরা মাস্ক খুলেনি৷
শিশু বিকাশের শিক্ষার্থী জেবিনের বাবা কাজল মিয়া (৪২) বলেন, ‘আমার মাইয়া পরতেকবারই নাচের লাগি পুরস্কার পায়৷ গানও গায় ভালো৷ ইস্কুলের মাস্টররাও তারে খুব আদর করে৷ আমার একটাই মাইয়া, আমি হেরে পড়ালেহা শিখায়া বড় করতাম চাই৷ আপনাদের এহানে ছবিও আঁকাও শিখে৷ এগুলো হের খুব ভালো লাগে৷’
শিশু-বিকাশ কেন্দ্রটি দড়ি হাইরমারা, মনিপুরা, হাইরমারা ও আব্দুল্লাহপুরসহ কয়েকটি গ্রামের শিশু-কিশোরদের মানুষিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে৷ প্রতি শুক্রবার শিশু বিকাশের বাচ্চাদের ক্লাসের এক ফাঁকে নাশতা খাওয়ানো হয়৷ এতে বাচ্চাদের ক্লাসের ক্লান্তিও থাকে না৷ বাচ্চারা আনন্দ নিয়ে ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারে৷
নাচের ক্লাসের শিক্ষিকা প্রিয়াঙ্কা খানম বলেন, ‘দীর্ঘদিন বিরতির কারণে বাচ্চারা নাচের মুদ্রা ভুলে গেছে। এখন নতুন করে শিখছে তারা। তবে অনেক আনন্দ নিয়ে ক্লাসে আসে তারা।’
প্রথম আলো ট্রাস্টের পরিচালনায় এনভয় গ্রুপের চেয়ারম্যান কুতুব উদ্দিন আহমেদের ব্যক্তিগত আর্থিক সহায়তায় সাদত স্মৃতি পল্লী প্রকল্পটি পরিচালিত হয়।