‘রোজার আগেই ইফতারির জিনিস পাইছি,আমার আর কিনুন লাগতো না’

পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে নিয়মিত বয়স্ক ভাতা প্রাপ্ত ৬০ জন বয়স্ককে ইফতার সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে।

নরসিংদী দড়ি হাইরমারা গ্রামে প্রতিষ্ঠিত সাদত স্মৃতি পল্লী প্রকল্প থেকে পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে নিয়মিত বয়স্ক ভাতা প্রাপ্ত ৬০ জন বয়স্ককে ইফতার সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে৷ গতকাল ২ এপ্রিল (শনিবার) প্রকল্পে এই আয়োজন করা হয়। ইফতার সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে জনপ্রতি ২ কেজি মুড়ি, ২ কেজি চিড়া, ২ কেজি চিনি, ১ কেজি খেজুর ১ কৌটো করে ট্যাং৷ একই সঙ্গে নিয়মিত ভাতার ১ হাজার টাকা করে প্রদান করা হয়েছে৷ বয়স্ক ভাতা প্রাপকেরা রমজান মাসে তাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য যেন দুধ-কলা বা অন্যান্য ফল-ফলাদি ক্রয় করে খেতে পারেন তার জন্য আরও অতিরিক্ত ১ হাজার করে টাকা প্রদান করা হয়েছে।

পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে নিয়মিত বয়স্ক ভাতা প্রাপ্ত ৬০ জন বয়স্ককে ভাতা ও ইফতার সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে।

উক্ত কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন প্রকল্পের নিয়মিত চিকিৎসক জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী ও স্থানীয় ইউনূস মিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জনাব আলতাব হোসেন৷

চিকিৎসক জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী বলেন, ‘আমি অল্প সময় ধরে এই প্রকল্পে স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছি৷ এখানে প্রত্যেকটি সেবা সম্পর্কে জানতেছি আর আপ্লুত হচ্ছি৷ সত্যিই প্রথম আলো ট্রাস্ট-সাদত স্মৃতি পল্লী অসহায় ও দরিদ্র মানুষের পাশে যেভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে বিষয়টি খুবই সুন্দর৷ এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানাই৷ যারা এই বয়স্কভাতা সেবা পাচ্ছেন তাঁরা আসলেই সেবা পাওয়ার যোগ্য৷ আমি এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করার সুযোগকে পরম পাওয়া বলে বিশ্বাস করি৷ সেবা গ্রহীতা ও সেবাদাতা সকলের মঙ্গল কামনা করি৷’

পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে নিয়মিত বয়স্ক ভাতা প্রাপ্ত ৬০ জন বয়স্ককে ভাতা ও ইফতার সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে।

শিক্ষক আলতাব হোসেন বলেন, ‘আমি স্কুলে চাকরির পূর্বে এই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে পজিটিভ অনেক কথাই শুনেছি৷ এই এলাকায় এসে সাদত স্মৃতি পল্লীর কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে পেরে খুবই লাগছে৷ আমার কাছে মনে হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানটি প্রত্যন্ত চর এলাকার জন্য অবশ্যই আশীর্বাদস্বরূপ৷,

সেবা প্রাপক অসহায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সমলা (৬৮) বলেন, ‘আমি বহু বছর ধইরা বয়স্ক ভাতা পাই৷ আমার ছেলে-মেয়ে, জামাই কিছুই নাই৷ আমার চলা-ফেরা খুব কষ্টের৷ আমি রোজা রাইক্কা আমনেরার লাইগ্গা আল্লাহর দরবারে দোয়া করুম৷ আমনেরার শইল-গতর যেন ভালা রাহে৷ কুতুব সাবের লাগিও আমরা সব সময় এই দোয়াই করি৷’

আরেক সেবা প্রাপক ইসমাইল মোল্লা (৭৩) জানালেন, রোজার আগেই ইফতারির জিনিস পাইছি৷ আমার ইফতার আর কিনুন লাগতো না৷ এ মাসো ভাতার লগে আরো ১ হাজার টেহাও পাইছি৷ সাবে (কুতুবউদ্দিন আহমেদ) আমরারে দুধ-কলা কিন্না খাইতাম দিছে৷ আমরা সাবে লাগি তার পরিবার আর আত্মীয়স্বজনের লাগি দোয়া করি।’

স্মৃতি পল্লী প্রকল্পটি এনভয় গ্রুপের চেয়ারম্যান কুতুবউদ্দিন আহমেদের ব্যক্তিগত আর্থিক সহযোগিতায় পরিচালনা করে প্রথম আলো ট্রাস্ট৷