সাদত স্মৃতি পল্লী মানবসেবায় নিরলসভাবে কাজ করছে

সাদত স্মৃতি পল্লীর শিশু বিকাশ কেন্দ্রে নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয় গল্প ও গানের ক্লাস।

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার দড়ি হাইরমারা গ্রামে অবস্থিত সাদত স্মৃতি পল্লী গ্রাম উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। প্রতি মাসে নানা আয়োজনে মুখর থাকে সাদত স্মৃতি পল্লী। গত ১ মার্চ সকাল ছয়টায় প্রকল্প অফিসে মানুষের লম্বা সারি দেখা যায়। সকলেই এসেছেন স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণের টিকিট সংগ্রহের উদ্দেশ্যে। সকাল সাতটায় প্রকল্প অফিস থেকে স্বাস্থ্য সেবার টিকিট প্রদান করা হয়। গত ১ মার্চ ডাক্তার শামসুজ্জামান হাসান ৩২ জন রোগীকে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করেন। একই সঙ্গে স্থানীয় ৩০ জন কিশোরীকে বয়ঃসন্ধিকালীন স্বাস্থ্য পরামর্শ প্রদানসহ স্যানিটারি ন্যাপকিন প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য,সাদত স্মৃতি পল্লীতে মাত্র পাঁচ টাকার বিনিময়ে সপ্তাহে তিন দিন শুক্র, শনি ও রবিবার একজন নারী ডাক্তার ও দুইজন পুরুষ ডাক্তারের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা প্রদানসহ রোগীদের বিনামূল্যে ওষুধ প্রদান করা হয়। 

এদিকে ১ মার্চ সকাল নয়টা থেকে শুরু হয় সাদত স্মৃতি পল্লীর শিশু বিকাশ কেন্দ্রের ক্লাস কার্যক্রম। সকালে প্রথমে শুরু হয় ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার ক্লাস। এরপরেই শুরু হয় শিশুদের ছবি আঁকার ক্লাস। ছবি আঁকার ক্লাসে কখনো বিষয় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়, আবার কখনো শিশুদের ইচ্ছেমতো ছবি আঁকতে দেওয়া হয়। ছবি আঁকার সকল উপকরণ প্রকল্প থেকে সরবরাহ করা হয়। ছবি আঁকার ক্লাসের পরেই শিক্ষার্থীদের টিফিনের বিরতি দেওয়া হয়।  বিরতির পর শুরু হয় শিশুদের নাচের ক্লাস।  নৃত্য শেখার পাশাপাশি সঙ্গীত বিষয়ে শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক ধারণা দেওয়া হয়। সাদত স্মৃতি পল্লীতে বিনামূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণেরও সুযোগ রয়েছে। প্রতি ব্যাচে ১৫ জন করে দুই ব্যাচে মোট ৩০ জন শিক্ষার্থী এই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে।

গত ৩ মার্চ সাদত স্মৃতি পল্লীতে ৬৬ জন বয়স্ক মানুষকে বয়স্কভাতা প্রদান করা হয়েছে।

১ মার্চ বিকেলে সাদত স্মৃতি পল্লীতে অনুষ্ঠিত হয় আবৃত্তির ক্লাস। শব্দের উচ্চারণ ও কবিতার ছন্দ নিয়ে আবৃত্তি ক্লাসে আলোচনা করা হয়। আবৃত্তির ক্লাসের পর শুরু হয় নাটকের ক্লাস। এছাড়া গত ২ মার্চ বিকালে শিশু বিকাশ কেন্দ্রে সঙ্গীত  ও গল্প বলার ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ৩ মার্চ  সাদত স্মৃতি পল্লীতে ৬৬ জন বয়স্ক মানুষকে বয়স্কভাতা প্রদান করা হয়েছে। স্থানীয় ষাটোর্ধ দরিদ্র ও অসহায় মানুষকে প্রতিমাসে ১০০০ টাকা করে এই ভাতা প্রদান করা হয়। ৪ মার্চ স্থানীয় ইউনুস মিয়া বালিকা বিদ্যালয়ের ৪০ জন শিক্ষার্থীকে ৫০০ টাকা করে আম্বিয়া খাতুন স্মৃতি মেধাবৃত্তি প্রদান করা হয়। ৫ মার্চ মনিপুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪০ শিক্ষার্থী ৫০০ টাকা করে মেধাবৃত্তি গ্রহণ করে।

শেলটেক গ্রুপের চেয়ারম্যান কুতুবউদ্দিন আহমেদের ব্যক্তিগত আর্থিক সহযোগিতায় সাদত স্মৃতি পল্লী প্রকল্পটি পরিচালনা করে প্রথম আলো ট্রাস্ট। ২০১৫ সাল থেকে মানবসেবায় নিরলসভাবে কাজ করছে সাদত স্মৃতি পল্লী।