‘এইডা আমার কম্বল, আইজ আমি এই কম্বল গায় দিয়া গুমামু'

প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসি সহযোগিতায় ভোলার দৌলতখান উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের ২০০ জনের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়। গতকাল ১১ জানুয়ারি মদনপুর আলোর পাঠশালা প্রাঙ্গণে।

মেঘনা নদীর মধ্যে জেগে ওঠা চর মদনপুর। এ চরে অবস্থিত প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত মদনপুর আলোর পাঠশালা। এখানে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে শিক্ষার্থী ফাবিয়া আক্তার। তার বাড়ি বিদ্যালয় থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে চরমুন্সি গ্রামে। প্রতিদিন ফাবিয়া খালবিল ভেঙে, সাঁকো পেরিয়ে পাঠশালায় আসে। ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েই সে বছরের প্রথম দিনে পেয়েছে নতুন বই। আজ সকালে পেয়েছে রঙিন শীতবস্ত্র। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আক্তার হোসেন তার গায়ে হলুদাভ কম্বল জড়িয়ে দিয়েছেন। ফাবিয়া তার বাবাকে আবদার করে বলে, ‘এইডা আমার কম্বল। আইজ আমি এই কম্বল গায় দিয়া গুমামু।' ফাবিয়া নতুন স্কুলে এসে খুব খুশি। সে ভালো করে লেখাপড়া করে অনেক বড় হতে চায়।

প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসি সহযোগিতায় ভোলার দৌলতখান উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নে মদনপুর আলোর পাঠশালা প্রাঙ্গণে গতকাল (১১ জানুয়ারি) ২০০ জনের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়। এ সহায়তা দেওয়া হয়েছে মদনপুর আলোর পাঠশালার শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও বিদ্যালয়ের আশপাশের বৃদ্ধদের।

প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসি সহযোগিতায় ভোলার দৌলতখান উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের ২০০ জনের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়। গতকাল ১১ জানুয়ারি মদনপুর আলোর পাঠশালা প্রাঙ্গণে।

ইউনিয়নের চরপদ্মা গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা জালাল আহমেদ ওরফে জালুমাঝির বয়স নব্বই বছরের বেশি। বটবৃক্ষের মতো মানুষটি এখন বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন। ঠিকমতো চলতে ফিরতে পারেন না। শীতার্ত এই বৃদ্ধের শরীরে একটি কম্বল জড়িয়ে দিয়েছেন মদনপুর আলোর পাঠশালার ব্যবস্থাপনা কমিটি ও ইউপি সদস্য ফারুক দৌলত। তিনি কম্বলটি পেয়ে হাসিমুখে হাত তুলে দোয়া করেন।

কম্বল পেয়ে খুশি বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীরা খুবই খুশি। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভাষ্য, মদনপুর একটি দুর্গম চরাঞ্চল। এখানে রাস্তাঘাট নেই। চারপাশে নদী। শিক্ষার্থীরা কষ্ট ক্লেশ সয়ে খালবিল ভেঙে বিদ্যালয়ে আসে। শিক্ষকেরা বিনা মূল্যে পড়ানোর পাশাপাশি প্রতি বছর প্রথম আলো ট্রাস্ট থেকে আসা গরম শীতবস্ত্র দিয়ে সকলের মুখে ফুটিয়ে তোলে খুশির ঝিলিক।

কম্বল পেয়ে অভিভাবক জোসনা বেগম বলেন, 'চরের মাইধ্যে গাছগাছালি কম। উত্তরালি বাতাসে খাতায় শীত মানে না। নরম তুলতুইলা রঙিন এই কম্বলে যদি এট্টু আরাম অয়! '

কম্বল বিতরণে উপস্থিত ছিলেন ইউপি সদস্য মো. হেলাল উদ্দিন, মদনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. কালিমুল্যাহ, পাঠশালার সহ-প্রধান শিক্ষক মো. আল আমিন, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য জাহাঙ্গীর আলম, প্রথম আলোর ভোলা প্রতিনিধি নেয়ামতউল্যাহ, ভোলা বন্ধুসভার সভাপতি আশ্রাফুল, সাধারণ সম্পাদক মো. সুমন, পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক নাইমুর রহমান প্রমুখ।

মদনপুরে প্রথম আলো ট্রাস্টের শীতবস্ত্র বিতরণের এই আয়োজনে সহযোগিতা করছে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসি। শীতার্ত মানুষের জন্য ৫০০ শীতবস্ত্র দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এই শীতবস্ত্র অসহায় শীতার্ত মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

সামিট গ্রুপ ও আঞ্জুমান-আজিজ ট্রাস্টের সহযোগিতায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মোট সাতটি স্কুল পরিচালনা করছে প্রথম আলো ট্রাস্ট। সাতটি স্কুলে মোট ১ হাজার ৩৫০ জন শিক্ষার্থী বিনা মূল্যে পড়াশোনা করছে। শিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের নানা ধরনের উপকরণও দেওয়া হয়। এবারও প্রতিবছরের মতো শীত মৌসুমে শীতবস্ত্র দেওয়া হচ্ছে।

এখন পর্যন্ত বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১ লাখ ৪০ হাজার ১৪৩ টাকা প্রথম আলো ট্রাস্টে অনুদান এসেছে।

শীতার্ত মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে পারেন আপনিও।

হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ত্রাণ তহবিল

হিসাব নম্বর: ২০৭২০০০০১১১৯৪

ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা।

অথবা

বিকাশে পেমেন্ট করতে পারেন: ০১৭১৩-০৬৭৫৭৬ এই মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বরে। বিকাশ অ্যাপে ডোনেশন অপশনের মাধ্যমেও আপনার অনুদান পাঠাতে পারেন।