‘ত্রাণ পাওয়ায় সাহস ফিরে পেলাম’

প্রথম আলো ট্রাস্টের ত্রাণ নিয়ে বাড়ি ফিরছেন বন্যার্ত মানুষেরা। গতকাল দুপুরে নোয়াখালীর সেনবাগ পৌরসভার উত্তর সাহাপুর এলাকায়।ছবি: মাহবুবুর রহমান

‘কোথাও খাওয়ার পানি নাই। মুড়ি-চিড়া নয়, খাওয়ার পানি এনেছ, তাতেই বেশি খুশি হয়েছি।’ ত্রাণ হাতে এভাবেই প্রতিক্রিয়া জানালেন চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার নাজিরহাট পৌরসভার বাসিন্দা নুর নাহার।

প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে গতকাল রোববার ফটিকছড়ির টোনাকাজির বাড়ি, পানাউল্লাহপাড়া ও নাছির মোহাম্মদ তালুকদার বাড়ি এলাকায় বন্যার্ত ২২৬ পরিবারের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন প্রথম আলো বন্ধুসভা চট্টগ্রামের সদস্যরা।

চট্টগ্রাম বন্ধুসভার অর্থ সম্পাদক আহমেদ রেজা বলেন, বন্ধুসভার বন্ধুরা মিলে মুড়ি, গুড়, বিশুদ্ধ পানি, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, বিস্কুট, খাওয়ার স্যালাইন, কেক, নুডলস, দেশলাই, জুসসহ বিভিন্ন শুকনা খাবার বন্যার্ত পরিবারগুলোর কাছে পৌঁছে দিয়েছেন।

এর আগে শনিবার ফটিকছড়ির সুন্দরপুর ইউনিয়নে বন্যাদুর্গত প্রায় ৩৫০ জনের জন্য রাতের খাবারের আয়োজন করা হয় বলে জানান চট্টগ্রাম বন্ধুসভার সভাপতি ইব্রাহিম তানভীর।

ফটিকছড়ির পাশাপাশি প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে গতকাল নোয়াখালীর সেনবাগ ও বেগমগঞ্জ উপজেলায় বন্যার্ত ১৫০ পরিবারের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়।

সেনবাগ উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের বাসিন্দা আবদুল জলিলের (৬০) বাড়িতে কোমরসমান পানি। পাঁচ দিন ধরে ঘর থেকে বের হতে পারেননি তিনি। পানি বেশি হওয়ায় তাঁদের বাড়িতে কেউ ত্রাণ নিয়েও যাননি বলে জানালেন। তাই ত্রাণের খোঁজে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। গতকাল প্রথম আলো ট্রাস্টের ত্রাণসামগ্রী পেয়ে তিনি বলেন, ‘বন্যার পানিতে খেতের ফসল, পুকুরের মাছ—সব গেছে। ঘরে খাবারও প্রায় শেষ। এমন সময় ত্রাণ পাওয়ায় সাহস ফিরে পেলাম।’

ত্রাণ হাতে সেনবাগের বাসিন্দা আবু বকর ছিদ্দিক (৭৬) বলেন, এই বন্যা তাঁদের নিঃস্ব করে ফেলেছে। সরকারি কোনো সহায়তা তাঁরা পাননি। উত্তর মোহাম্মদপুর গ্রামের বাসিন্দা রিকশাচালক ফজলুল হক বলেন, এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে রিকশা চালাতে পারছেন না। আয়রোজগার বন্ধ। স্ত্রী, বৃদ্ধ মা ও তিন সন্তান নিয়ে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। দুবেলা খাবার জোটানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে।

গতকাল চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীর বন্যার্ত ৩৭৬ পরিবারকে ত্রাণসহায়তা দেওয়া হয়েছে আইপিডিসি ফাইন্যান্সের সৌজন্যে। প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে বন্ধুসভার মাধ্যমে ত্রাণসহায়তা অব্যাহত থাকবে।

বন্যার্তদের সহায়তায় এগিয়ে আসুন

হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ ত্রাণ তহবিল। হিসাব নম্বর: ২০৭২০০০০১১১৯৪ঢাকা ব্যাংক পিএলসিকারওয়ান বাজার শাখাঢাকা

অথবা বিকাশে পেমেন্ট করতে পারেন: ০১৭১৩-০৬৭৫৭৬ এই মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বরে। বিকাশ অ্যাপে ডোনেশন অপশনের মাধ্যমেও আপনার অনুদান পাঠাতে পারেন।