‘হানিতে নামলেই সারা গায়ে চুলকায়। চুলকানির লাই রাইতে ঘুমাইতেও হারি না। চারদিকে হানির লাই হাসপাতালেও যাইতাম হারি না। হিয়াল্লাই আইজ ইয়ানে আইছি। ডাক্তার দেখি ওষুধ দিছে। এইবার দেখি কদ্দুর শান্তিতে ঘুমাইতাম হারি।’
কথাগুলো নোয়াখালীর বন্যাকবলিত সোনাইমুড়ী উপজেলার বারগাঁও ইউনিয়নের রাজীবপুর গ্রামের কাঞ্চন আক্তারের। ২৪ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে আয়োজিত ‘ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে’ চিকিৎসা নিতে এসে এভাবেই নিজের কষ্টের কথা জানান ষাটোর্ধ্ব এই নারী।
‘ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের’ আয়োজন করা হয় রাজীবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। নোয়াখালীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল এবং জেলার বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত ৯ চিকিৎসক দিনব্যাপী পাঁচ শতাধিক রোগীকে চিকিৎসাসেবা দেন। পাশাপাশি বন্যার্ত মানুষদের বিনা মূল্যে ওষুধও দেওয়া হয়।
কাঞ্চন আক্তার জানান, বন্যার পর অনেকেরই চুলকানি হয়েছে। তাঁর দুই নাতি-নাতনি ও ছেলের বউয়েরও চুলকানি হয়েছে। নাতি-নাতনির দুই দিন পরপরই জ্বর ওঠে। বন্যার পর শুধু তাঁদের পরিবার নয়, আশপাশের অনেকেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
বেশ কিছুদিন ধরে চুলকানি ও পেটের ব্যথায় ভুগছে শিশু লাবিবা ও হাফছা। দুই মেয়েকে নিয়ে এসেছিলেন তাদের বাবা হারুনুর রশিদ। তিনি জানান, এক মাসের বেশি সময় ধরে এই এলাকার মানুষ বন্যায় কষ্ট পাচ্ছেন। এখনো গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে পানি। এ সময়ে অনেকে নানা রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। বন্যার্ত ব্যক্তিদের জন্য এ ধরনের মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করা খুবই প্রয়োজন ছিল।
শেফালী আক্তার (৫০) নামের এক নারী জানান, ওষুধ কেনার মতো টাকা নেই। এখানে এসে চিকিৎসকদের সমস্যার কথা বলেছেন। চিকিৎসকেরা পরামর্শের পাশাপাশি ওষুধও দিয়েছেন।
চিকিৎসকেরা সেবা নিতে আসা বন্যার্ত মানুষদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার পাশাপাশি বন্যার পানিতে ছড়িয়ে পড়া রোগজীবাণু থেকে রক্ষা পাওয়ার বিভিন্ন পরামর্শ দেন।
আরও যাঁরা সহায়তা দিয়েছেন (২৪ সেপ্টেম্বর)
বন্যার্তদের সহায়তায় প্রথম আলো ট্রাস্টের ত্রাণ তহবিলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির আর্থিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত আছে। গত ২২ আগস্ট থেকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত এ তহবিলে মোট জমা হয়েছে ১ কোটি ৫ লাখ ৩২ হাজার ২৪৭ টাকা।
● ইনার উইল ক্লাব অব ঢাকা সানফ্লাওয়ার ডিস্ট্রিক্ট ২৩৮: ২ লাখ টাকা।
● সোহেল ও লিমা: ২৫ হাজার টাকা।
● খয়েরহুদা কল্যাণ সমিতি: ১০ হাজার টাকা।