‘কম্বলখান দিয়া খুব উপকার করিলেন’

প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে ও বন্ধুসভার সদস্যদের সহযোগিতায় ২০০ অসহায় ও শীতার্ত মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়। মঙ্গলবার ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সৈয়দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে
ছবি: প্রথম আলো

খতেজা বেগমের বয়স ৮০ ছুঁই ছুঁই। গায়ে শাড়ির সঙ্গে একটি ফিনফিনে সোয়েটার। লাঠিতে ভর দিয়ে চলাফেরা করেন। আজ বৃহস্পতিবার প্রথম আলো ট্রাস্টের কম্বল বিতরণের সময় কম্বল পেয়ে তাঁর খুশি যেন বাধ মানছিল না। খতেজা বললেন, ‘মোক কম্বল দেওয়ার কাও নাই। জারের রাইতত কষ্ট পাছিনু। তোমরা কম্বলখান দিয়া খুব উপকার করিলেন।’

আরও পড়ুন

প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে ও বন্ধুসভার সদস্যদের সহযোগিতায় আজ ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় ২০০ অসহায় ও শীতার্ত মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়। এর আগে বন্ধুসভার সদস্যরা গত সোম ও মঙ্গলবার সদর উপজেলার বেগুনবাড়ি ইউনিয়নের দানারহাট, শালেরহাট, বান্দিগড়, সৈয়দপুর গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অসহায় শীতার্ত মানুষের তালিকা তৈরি করেন। পরে তাঁদের ১৪০ জনের হাতে কম্বল বিতরণের স্লিপ তুলে দেওয়া হয়। আজ দুপুরে সৈয়দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে তাঁদের মধ্যে কম্বল বিতরণ করেন বন্ধুসভার সদস্যরা। এ ছাড়া পৌর শহরের পাশের সালন্দর, আকচা, নারগুনসহ কয়েকটি এলাকায় ঘুরে ঘুরে ৬০টি কম্বল বিতরণ করা হয়।

আরও পড়ুন

মানুষের সহযোগিতায় কোনোরকমে খেয়ে জীবন চলে সদর উপজেলার দানারহাট গ্রামের মহসিনা বেগমের। কম্বল পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় এই ৭০ বছরের বৃদ্ধা বললেন, ‘বাড়িত হামার কাউ নাই, মুই একা। হামার ঘরের বাঁশের টাটির (বেড়া) ফুটা দিয়ে বাতাস ঢোকে। বিছানাত শুতি (শুয়ে) থাকিয়াও শান্তি পাউ না। এ বছর শীত খুব পড়িছে। ঠান্ডা বাতাসোত হামরা কাহিল হয়া পড়ছিনু। এলা আরাম হবে।’

প্রথম আলো ট্রাস্টের কম্বল পেয়ে বাড়ি ফিরছেন শীতার্ত অসহায় মানুষ। মঙ্গলবার ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সৈয়দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে
ছবি: প্রথম আলো

বান্দিগড় গ্রামের বাতাসী বেওয়া (৭৩) মেয়ের বাড়িতে থাকেন। দিনমজুর জামাইয়ের আয়ে সংসার চালানো দায়। কম্বলের অভাবে তিনি কষ্ট পাচ্ছিলেন। কম্বল পেয়ে তিনি বলেন, ‘এর আগোত মোক কাও কম্বল দেয় নাই। তোমরা কী যে উপকার করিলেন, ভগবান তোমারলাক ভালো করিবে।’

কম্বল বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলার সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম, সৈয়দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম, বশভাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আহসান হাবিব, শিক্ষক রনজিত কুমার রায়, বালাপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক মিনাজ উদ্দিন, বন্ধুসভার সহসভাপতি ফরহাদুল ইসলাম, লায়লা ফেরদৌস রোজা, সাংগঠনিক সম্পাদক পিয়াল হাসান, সহসাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শিহাব, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক এন্তাজ আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

শীতার্ত মানুষের সহযোগিতায় আপনিও এগিয়ে আসতে পারেন। সহায়তা পাঠানো যাবে ব্যাংক ও বিকাশের মাধ্যমে।
হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ ত্রাণ তহবিল
হিসাব নম্বর: ২০৭২০০১১১৯৪
ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা।
অথবা বিকাশে পেমেন্ট করতে পারেন: ০১৭১৩-০৬৭৫৭৬ এই মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বরে। বিকাশ অ্যাপে ডোনেশন অপশনের মাধ্যমেও আপনার অনুদান পাঠাতে পারেন।