‘শীতে শরীর কালাইয়্যা নেয়, কম্বলডা কাজে দিবো'

প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে আজ শনিবার মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার ১১টি গ্রামের ১০০ জন অসহায় ও শীতার্ত মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।

প্রায় ছয় বছর আগে উলাইল দাসপাড়া গ্রামের স্বরসতী দাসের (৬০) স্বামী সুনীল চন্দ্র দাস মারা যান। ছেলেরা বিয়ে করে আলাদা সংসার পেতেছেন। অন্যের সাহায্য সহযোগিতায় চলে স্বরসতীর একার সংসার। পায়ে ব্যথা থাকায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে কম্বল নিতে এসেছিলেন তিনি। কম্বল পেয়ে স্বরসতী দাস বলেন, ‘স্বামী নাই। মাইনষের সাহায্য-সহযোগিতায় খাইয়া-না খাইয়া বাঁইচা আছি। এই শীতে শরীর কালাইয়্যা নেয়। একটা কম্বল কেউ দ্যায় নাই। তোমাগো কম্বলডা পাইয়্যা উপকার অইলো। এহন রাইতে গায়ে দিয়্যা থাকুম।’

 আজ শনিবার প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার ১১টি গ্রামের ১০০ জন অসহায় ও শীতার্ত মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়। উলাইল এলাকায় উলাইল মডেল হাইস্কুল মাঠে বিকেল চারটার দিকে এসব কম্বল বিতরণ করা হয়। এ সময় কম্বল পেয়ে স্বরসতী দাসের মতো অসহায় ও দুস্থ প্রবীণ নারী ও পুরুষেরা স্বস্তি প্রকাশ করেন।

প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে আজ শনিবার মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার ১১টি গ্রামের ১০০ জন অসহায় ও শীতার্ত মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।

 লাঠিতে ভর দিয়ে চলাফেরা করেন তালুকনগর গ্রামের নেদু শেখ (৭০)। প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে একটি কম্বল হাতে তুলে দিতেই তাঁর চোখেমুখে আনন্দের ছাপ দেখা যায়। তিনি বললেন, ‘ইবার খুব ঠাণ্ডা পড়ছে। রাইতে ঠাণ্ডায় কাঁপুনি ধরে। এই কম্বল পাইয়্যা ভালোই অইলো। এহন কিছুডা অইলেও শীত কাটবো।’

 তালুকনগর গ্রামের বাক্‌প্রতিবন্ধী টগর আক্তারও (৫০) এসেছিলেন। অবিবাহিত এই নারী বাবার বাড়িতেই থাকেন। বৃদ্ধ বাবা-মায়ের সংসারের কষ্টে দিন চলে তাঁর। তিনি কথা বলতে না পারলেও কম্বল পেয়ে তাঁর চোখেমুখে হাসির ঝিলিক ফুটে উঠে।

প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে আজ শনিবার মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার ১১টি গ্রামের ১০০ জন অসহায় ও শীতার্ত মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।

এর আগে মানিকগঞ্জ বন্ধুসভার সদস্যরা গতকাল শুক্রবার দৌলতপুর উপজেলার উলাইল, তালুকনগর, বহড়াবাড়ি, যুগিন্দা, গাজিসাইল, ভবানিপুর, সিলামপুর পাঁচতুবি, হাটাইল, বড় হাতকড়া ও আন্দিবাড়ি গ্রামে বাড়ি বাড়ি গিয়ে অসহায় শীতার্ত মানুষের তালিকা তৈরি করেন। পরে ১০০ জনের হাতে কম্বল বিতরণের স্লিপ তুলে দেওয়া হয়। সেই স্লিপ নিয়ে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে শীতার্ত ও বয়স্ক নারী-পুরুষেরা দিঘী দক্ষিণপাড়া একটি মাঠে কম্বল নিতে উপস্থিত হন। যাঁরা আসতে পারেননি, তাঁদের বাড়িতে কম্বল পৌঁছে দেন বন্ধুসভার সদস্যরা।

 কম্বল বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় কলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য ও সমাজসেবক মহিদুর রহমান, প্রথম আলোর মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি আব্দুল মোমিন, সামাজিক সংগঠন ধূমকেতুর সভাপতি মাহবুব আলম, প্রথম আলো মানিকগঞ্জ বন্ধুসভার সভাপতি মো. চাঁন মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক জিসানুর রহমানসহ বন্ধুসভার সদস্যরা।

প্রথম আলো ট্রাস্টের এই উদ্যোগে সহযোগিতা করছে ইলেকট্রো মার্ট লিমিটেড (কনকা)। শীতার্ত মানুষের জন্য প্রথম আলো ট্রাস্টে পাঁচ লাখ টাকার অনুদান দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এই অনুদানের টাকায় কেনা কম্বল অসহায় শীতার্ত মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

শীতার্ত মানুষের সহযোগিতায় আপনিও এগিয়ে আসতে পারেন।

হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ত্রাণ তহবিল

হিসাব নম্বর: ২০৭২০০০০১১১৯৪

ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা।

অথবা

বিকাশে পেমেন্ট করতে পারেন: ০১৭১৩-০৬৭৫৭৬ এই মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বরে। বিকাশ অ্যাপে ডোনেশন অপশনের মাধ্যমেও আপনার অনুদান পাঠাতে পারেন।