নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলায় প্রত্যন্ত গ্রামে মো. নূরুজ্জামানের বাড়ি। অভাব অনটনের সংসারে নিজের ইচ্ছা শক্তির জোড়ে পড়াশোনা করেছেন। অনেক বাধা অতিক্রম করে নিজের চেষ্টায় ২০১১ সালে মাধ্যমিকে জিপিএ-৫ পেয়ে তাক লাগিয়ে দেন তিনি। কিন্তু পরবর্তী পড়াশোনা কীভাবে করবেন তা নিয়ে শঙ্কায় পড়েন পরিবার। পরে তাঁর এই অদম্য মেধা ও ইচ্ছা শক্তিকে বিবেচনায় নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী শিক্ষাবৃত্তির জন্য নির্বাচন করা হয়। এই শিক্ষাবৃত্তি সহায়তার উচ্চমাধ্যমিকেও জিপিএ-৫ পেয়ে সাফল্য ধরে রাখেন তিনি। এই সফলতার জন্য তাঁকে স্নাতক পর্যায়েও শিক্ষাবৃত্তির আওতায় রাখা হয়। পরে তিনি ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে ২০১৩-১৪ সেশনে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়ার সৌভাগ্য অর্জন করেন। ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্টের শিক্ষাবৃত্তি সহায়তায় এই বিভাগ থেকে স্নাতক (সম্মান) সম্পন্ন করেন।
এতক্ষণ যা বললাম এটা মূলত খবর নয়। খবর হলো, তিনি এখন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে এমএসসি (মাস্টার্স) করছেন মালয়েশিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। এখানে তিনি ফুল ফ্রি ও ফুল ফান্ডেড স্কলারশিপ নিয়ে পড়াশোনা করছেন । নূরুজ্জমান জানালেন, ‘আমি এখানে গ্র্যাজুয়েট রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট (জিআরএ) হিসেবে বৃত্তিটা পেয়েছি। এটার ফান্ডিং করছে মালয়েশিয়া একটা কোম্পানি। আমি শুরু করেছি ২০২০ সালের মার্চ মাসে। ২ বছরের এমএসসি ডিগ্রি। এটা কোণ অর্গানাইজেশনের কোনো রেগুলার বৃত্তি না। একটা ইন্ডাস্ট্রির অনুদানে একটা প্রজেক্ট এর রিসার্চ গ্রুপের মেম্বার হিসেবে বৃত্তিটা পাচ্ছি। আমাদের রিসার্চ গ্রুপ সেই ইন্ডাস্ট্রির একটা সমস্যার সমাধান করে দিচ্ছে। আর ইন্ডাস্ট্রির স্পনসর হিসেবে ফান্ড দিচ্ছে। আমি বর্তমানে এখানে স্নাতকোত্তর করছি। প্রায় শেষের দিকে আছি। ফাইনাল থিসিস জমা দিয়েছি, এখন ভাইভার জন্য অপেক্ষা করছি।’
সামনের আশা আরও বড় নূরুজ্জামানের। তিনি বললেন, ‘সামনে আরও সংগ্রাম করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। অস্ট্রেলিয়া বা আমেরিকাতে স্কলারশিপ নিয়ে পিএইচডি করার খুব ইচ্ছা আছে। চেষ্টা চলছে।’
আমরাও জানি নূরুজ্জামানেরা থামার নয়। তাঁরা এগিয়ে যান দুর্বার গতিতে। তাঁদের জন্য শুভ কামনা।