পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য আয়াতুল্লাহ মৃধা কাজ করেছেন ইটভাটায় । কখনও ধরেছেন মাছ কখনওবা ঠিকা শ্রমিকের কাজ কিন্তু হার মানতে শেখননি তিনি। তাঁর এই অদম্য মনোভাবের কারনে সফলতাও ধরা দিয়েছে হাতেনাতে। ২০১৮ সালে সবাইকে আবাক করে কলাপাড়ার মহিপুর কো-অপারেটিভ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ব্যবসায় শিক্ষায় পান জিপিএ-৫। ২০২০ সালে নটর ডেম কলেজের বাণিজ্য বিভাগ থেকে পুনরায় জিপিএ-৫ পেয়ে সাফল্য ধরে রাখেন। তিনি পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষায়ও জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন। আয়াতুল্লাহ পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার পুরান মহিপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ২০২০-২১ সেশনে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমে ইংরেজি ও পরবর্তী সময়ে বিষয় পরিবর্তন করে আইন বিভাগে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা করছেন। তবে আয়াতুল্লাহ মৃধা ২০২১-২২ সেশনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ‘সি’ ইউনিটে বাণিজ্য বিভাগ থেকে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছিলেন। কিন্তু পছন্দের বিষয় ‘আইন’ না পাওয়ায় আয়াতুল্লাহ ভর্তি হননি জহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার আইন পড়তে ভালো লাগে। তাই পরীক্ষায় দ্বিতীয় হয়েও ভর্তি হইনি। ভবিষ্যতে আইন বিষয়ে পড়াশুনা করে আমি জুডিশিয়াল সার্ভিসে যুক্ত হয়ে জজ হতে চাই। আর আমার এই পথ চলায় আমি ব্র্যাক ব্যাংক ও প্রথম আলো ট্রাস্টের কাছে কৃতজ্ঞ। ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্টের শিক্ষাবৃত্তি আমার চলার পথকে মসৃন করেছে।’
উল্লেখ্য, আয়াতুল্লাহর বাবা মোস্তফা মৃধা ঢাকার রামপুরায় বাবুর্চির কাজ করেন। তবে তিনি উচ্চ রক্তচাপসহ নানা রোগে ভুগছেন। যা আয় করেন, নিজের ওষুধসহ ভরণপোষণেই খরচ হয়ে যায়। তাদের জমিজমা নেই। অয়াতুল্লাহর অদম্য মনোভাব ও ভালো ফলাফল বিবেচনা করে এইসএসসি ও স্নাতক পর্যায়ে ব্র্যাক ব্যাংক ও প্রথম আলো ট্রাস্ট শিক্ষাবৃত্তিতে তাঁকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আয়াতুল্লাহ বর্তমানে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছেন।