ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার দশদোনা গ্রামে আবুল হোসেনের বাড়ি। নিজেদের জমি জমা বলতে কিছুই নেই। বাবা মো. হাকিম মিয়া দিনমজুর। মা জাহানারা বেগম বাসাবাড়িতে কাজ করেন। রোজগার নেই, তাই পড়ালেখা বন্ধ করে দিতে চেয়েছিলেন বাবা। কিন্তু মায়ের সমর্থন এবং আবুল হোসেনের দৃঢ় মনোবলের কারণে ২০১৬ সালে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। বৃত্তির পান ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী তহবিল থেকে।
শিক্ষাবৃত্তির মাধ্যমে তিনি কুমিল্লা মেডিকেল অ্যাসিসটেন্স ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) থেকে ৪ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করেন। বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর চক্ষু হাসপাতালে সহকারী মেডিকেল অফিসার পদে চাকরি করছেন। এখন নিজের পরিবারে সহযোগিতা করছেন।
সহকারী মেডিকেল অফিসার হওয়ার পেছনের গল্প জানতে চাইলে আবুল হোসেন জানান, ‘আমি আসলে নিম্নবৃত্ত পরিবারের সন্তান। অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে বড় হয়েছি। তবে সব সময় ভালো ছাত্র ছিলাম। যার কারণে আমার শিক্ষকেরা সব সময় আমাকে সহযোগিতা করেছেন। আমি যখন এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করি তখন আমার এক শিক্ষকের মাধ্যমে প্রথম আলোর শিক্ষাবৃত্তি সম্পর্কে জানতে পারি। নিয়ম অনুযায়ী আবেদন করি। পরে আমাকে ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী শিক্ষাবৃত্তির জন্য নির্বাচন করে। এই শিক্ষাবৃত্তি দিয়েই আমি ৪ বছরের ডিএমএফ (ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল ফ্যাকাল্টি) পড়াশোনা শেষ করি। আপনাদের সহযোগিতা ও মা-বাবার দোয়ায় এখন ভালো আছি।’
স্বাস্থ্যসেবা খাতে আসার কারণ হিসেবে তিনি জানান, ‘মানুষের সেবা করার ইচ্ছা ছিল আমার। তা ছাড়া এইচএসসি ও স্নাতক পর্যায়ে পড়ার সামর্থ্য ছিল না। দ্রুত কিছু করা যায়, এমন কিছু করতে হবে মাথায় ছিল। তাই এই লাইনে আসা। তবে বাবা-মা অনেক সাপোর্ট করেছে। এখন তাঁরা খুব খুশি। এখন ইচ্ছা মেডিকেল রিলেটেড আরও পড়াশোনা করার। যেমন পাবলিক হেলথে স্নাতক করে স্বাস্থ্যসেবা মান আরও উন্নত করতে চাই।’