ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী তহবিল থেকে শিক্ষা বৃত্তিপ্রাপ্ত সিবাই যাদবের জন্ম মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর চা বাগানে। তাঁর বাবা অনত যাদব শমশেরনগর চা বাগানের গাড়ি চালক ছিলেন। ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ২০১৯ সালে জুনে পরলোক গমন করেন। বাবার মৃত্যুর কয়েক মাস আগেই মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ক্যামেলিয়া ডানকান ফাউন্ডেশনের লংলা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। কিন্তু কলেজে ভর্তির আগে বাবা চলে যান না ফেরার দেশে। এমনিতেই অভাবের সংসার, তার ওপর একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তির চলে যাওয়ায় একদম ভেঙে পড়েন সিবাই ও তার মা সুমি যাদব। সুমি যাদব গৃহিণী ছিলেন। কিন্তু স্বামী মারা যাওয়ার পর চা-বাগানের কাজ শুরু করেন। দৈনিক ১৭০ টাকা মজুরিতে কাজ করে কোনোমতে সংসার চালান।
এই যখন পরিবারের অবস্থা, তখন তাঁদের পাশে দাঁড়ায় ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী তহবিল। সিবাইকে দেওয়া হয় শিক্ষাবৃত্তি। এই বৃত্তির মাধ্যমে পড়াশোনা করে এইচএসসিতে সাফল্য ধরে রাখেন তিনি। পরে তাঁকে স্নাতক পর্যায়েও শিক্ষাবৃত্তির জন্য নির্বাচন করে করা হয়। বর্তমানে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট আব ইনফরমেশন টেকনোলজি (আইআইটি) বিভাগে অধ্যয়নরত। সিবাইয়ের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, এ বছর ফেব্রুয়ারিতে ক্লাস শুরু হয়। পরে প্রথম সেমিস্টার দিয়েছেন, ফলও প্রকাশ হয়েছে। এ মাসের ৩১ তারিখ দ্বিতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষা সুর হবে। আশা করছেন ভালো ফল করবেন।
ছোট থেকেই কম্পিউটারের প্রতি আগ্রহ ছিল আমার। এখন আইটি বিভাগেই পড়ছি, এটা আমার জন্য একটা পাওয়া।
সিবাই তাঁর এগিয়ে যাওয়ার বিষয়ে বলেন ‘পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত বাড়িতে ছিলাম। পরে প্রাথমিক বিদ্যালয় পাস করা পর ক্যামেলিয়া ডানকান ফাউন্ডেশনের লংলা উচ্চ বিদ্যালয় ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হই। চা-বাগান শ্রমিকদের সন্তানদের জন্য সব ফ্রি ছিল। সেখান থেকে এসএসসি পাস করার পর সুজা মেমোরিয়াল কলেজে ভর্তি হই। ২০২২-২৩ সেশনে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ কৃষি গুচ্ছে সুযোগ পাই। পরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আইআইটি বিভাগে ভর্তি হই।’
বিশ্ববিদ্যালয় জীবন প্রায় এক বছর হয়ে গেল। কি স্বপ্ন দেখেন সামনে? এর উত্তরে সিবাই বলেন, ‘ছোট থেকেই কম্পিউটারের প্রতি আগ্রহ ছিল আমার। এখন আইটি বিভাগেই পড়ছি, এটা আমার জন্য একটা পাওয়া। আশা আছে দেশ ও দেশের বাইরে কাজ করার।’