শেরপুরের নালিতাবাড়ি উপজেলার শামীমা আক্তার ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বেন। কিন্তু পরিবারের অর্থ সঙ্কট তাঁর স্বপপূরণের পথে বারবার বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিবারের অর্থ সঙ্কটের মধ্যেও শামীমা পড়লেখা বন্ধ করেননি। অদম্য শামীমা আক্তার ২০২৩– ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।
শামীমার বাবা আবু সাঈদ পেশায় জেলে। তার নিজের বলতে কোন জমি নেই। খাস জমিতে ঘর করে বসবাস করছেন তিনি। সকাল–সন্ধ্যা কঠোর পরিশ্রম করেন কিন্তু পরিবারের অভাব দূর হয়না। অর্থ সঙ্কটের কারনে পরিবারের তিন ছেলেমেয়ের পড়ালেখা বারবার বাধাগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু সন্তানদের অদম্য মনোভাবের কারনে প্রত্যেকেই আছেন উচ্চশিক্ষার পথে। বড় ছেলে হেলাল উদ্দিন ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করছেন। বড় মেয়ে শারমিন খাতুন পড়ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগে। সম্প্রতী পরিবারের ছোট মেয়ে শামীমা আক্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণীবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।
২০২৩–২০২৪ সেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শামীমা আক্তার বলেন,‘ আমার বাবা উদয়–অস্ত হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করে পরিবারের ব্যয় নির্বাহ করার চেষ্টা করছেন। আমরা শত প্রতিকূলতাকে মোকাবিলা করে এ পর্যন্ত এসেছি। এসএসসিতে ভালো ফল করার পরও আমার কলেজে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। সেই সময়ে আমি ব্র্যাক ব্যাংক–প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী শিক্ষাবৃত্তি পাই। এই বৃত্তি না পেলে আমি এ পর্যন্ত আসতে পারতাম না। পড়াশোনা শেষ করে আমি বিসিএস ক্যডার হতে চাই।’
নলিতাবাড়ির সমস্চূড়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২১ সালে জিপিএ–৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয় শামীমা আক্তার। পারিবারিক অবস্থা বিবেচনা করে তাকে ‘ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী তহবিল’ থেকে দেওয়া হয় অদম্য মেধাবী শিক্ষাবৃত্তি। ভালো ফলের ধারাবাহিকতা বাজায় থাকে এইচএসসিতেও। ২০২৩ সালে ঢাকার বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ থেকে জিপিএ–৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন তিনি।
উল্লেখ্য, শামীমা আক্তারের স্বপ্নপূরণের পথে আবারও পাশে দাঁড়িয়েছে ‘ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট’। তিনি স্নাতক পর্যায়েও এই শিক্ষাবৃত্তির জন্য মনোনীত হয়েছেন।