সাত ভাই-বোনের মধ্যে আমিই সবার ছোট। বাবা দিনমজুর ছিলেন এবং একাই পরিবারের ভরণপোষণ বহন করতেন। যখন আমি সপ্তম শ্রেণিতে পড়ি তখন আমার বাবা মারা যান। পরিবারের অনটন আরও বেড়ে যায়। নানা সমস্যার মধ্যেও অষ্টম শ্রেণিতে জেএসসি পরীক্ষা দিই এবং বৃত্তি পাই। নবম শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিভাগ নিই। বিজ্ঞান বিভাগে প্রাইভেট পড়তে হতো কিন্তু বাসা থেকে তেমন কোন সাহায্য পাচ্ছিলাম না। তাই তখন থেকেই বড় ভাইয়ের সঙ্গে রাজমিস্ত্রির কাজ করতাম। এভাবেই কঠোর পরিশ্রম করে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাই।
ভালো ফল করায় প্রথম আলোর নাটোর প্রতিনিধি মুক্তার হোসেন স্যার প্রতিবেদন পাঠান এবং প্রথম আলোয় সেটা ছাপানো হয়। আমি অনেক দুশ্চিন্তায় ছিলাম। কিন্তু সব চিন্তা দূর হয়ে যায়, যখন জানতে পারলাম আমাকে শিক্ষাবৃক্তি দেওয়া হবে। আলহামদুলিল্লাহ ‘ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী তহবিল’ থেকে শিক্ষাবৃত্তি পেলাম। চলতে থাকল এইচএসসি পর্যায়ের পড়াশোনা। শিক্ষাবৃত্তির সহায়তায় আরও উদ্যোম নিয়ে পড়াশোনা করলাম। সেই ধারাবাহিকতায় এইচএসসিতেও জিপিএ-৫ পাই। আমাকে স্নাতক পর্যায়েও শিক্ষাবৃত্তি দেয় ‘ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী তহবিল’।
ভলো ফলের পাশাপাশি স্বপ্নটাও বড় হচ্ছিল আমার। ডাক্তার হওয়ার ব্রত নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকলাম। পরে গ্রীন লাইফ মেডিকেল কলেজে অসচ্ছল মেধাবী কোঠায় ভর্তির সুযোগ পেয়ে যাই। স্বপ্নটাও সত্য হলো আমার।
বর্তমানে ইবনে সিনা স্পেশালাইজড হসপিটালে মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত আছি। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিজেকে দেখতে চাই ইনশাআল্লাহ। আগামীর পথচলায় সকলের দোয়া কামনা করছি।