অদম্য ভূপেন রসায়ন প্রকৌশল বিভাগে উচ্চতর ডিগ্রি নিতে চান

অদম্য মেধাবী ভূপেন চন্দ্র রায়।

অদম্য মেধাবী ভূপেন চন্দ্র রায় ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বেন। দরিদ্রতার সঙ্গে সংগ্রাম করে পড়াশোনা অব্যাহত রেখেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন তিনি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত ভূপেন ভবিষ্যতে রসায়ন প্রকৌশল বিভাগে উচ্চতর ডিগ্রি নেওয়ার স্বপ্ন দেখেন।  

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার রহিমাপুর গ্রামের ভূপেনের চলার পথটা সহজ ছিল না। বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্ব ছিল আট কিলোমিটার। কোন দিন সকালে জলখাবার জুটেছে কোনদিন জোটেনি। কিন্তু শিক্ষার পথ থেকে বিচ্যুত হননি তিনি। এর ফলও মিলেছে হাতেনাতে। তারাগঞ্জ ও এ সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২০ সালে জিপিএ –৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয় ভূপেন। ভালো ফলের ধারাবাহিকতা বাজায় থাকে এইচএসসিতেও। ২০২২ সালে নীলফামারী সরকারি কলেজ থেকে জিপিএ–৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করে ভূপেন। এর পর ভর্তি পরীক্ষার বাধা পেরিয়ে বর্তমানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগে প্রথম বর্ষে অধ্যায়ন করছেন।

কথা প্রসঙ্গে ভূপেন বলেন, ‘আমাদের সংসারে অভাব–অনটন নিত্য লেগে আছে। এসএসসিতে ভালো ফল করার পরও উচ্চ শিক্ষার পথ বন্ধ হওয়ার জোগাড়। এসময় ‘ব্র্যাক ব্যাংক– প্রথম আলো ট্রাস্ট’ অদম্য মেধাবী শিক্ষাবৃত্তি পাই। এই বৃত্তি না পেলে আমি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত আসতে পারতাম না।’

ভূপেনের বাবা জগেন চন্দ্র রায় পেশায় দিনমজুর। কখনো কখনো ফেরি করে ঝালমুড়ি বিক্রি করেন।  নিজের বলতে বসতভিটা ছাড়া আর কোন জমি নেই। সকাল–সন্ধ্য পরিশ্রম করেন জগেন চন্দ্র রায়। কিন্তু পরিবারের অভাব দূর হয়না। অর্থের অভাবে বড় মেয়ে নীলা রানি রায়ের পড়ালেখা দশম শ্রেণিতে বন্ধ হয়ে যায়। এখন জগেন চন্দ্র রায় স্বপ্ন দেখেন ছেলে পড়লেখা শেষ করে মানুষের মতো  মানুষ হবে। পরিবারের দায়িত্ব নেবে।   

উল্লেখ্য, ভূপেন চন্দ্র রায়ের স্বপ্নপূরণের পথে আবারও পাশে দাঁড়িয়েছে ‘ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট’। তিনি স্নাতক পর্যায়েও এই শিক্ষাবৃত্তির জন্য মনোনীত হয়েছেন।