দুর্ঘটনা পরবর্তী মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন

উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে গত ২১ জুলাই বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনার শিকার ব্যক্তি ও পরিবারের মানুষজন মারাত্মক ট্রমার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এহেন অবস্থায় দুর্ঘটনা পরবর্তী মানসিক ট্রমা মোকাবিলার জন্য কিছু পরামর্শ দিয়েছেন ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্টের অদম্য মেধাবী শিক্ষাবৃত্তি পাওয়া ডা. নাজমিন বেগম। বর্তমানে তিনি সিলেটের কুইন্স হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক বিভাগের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত। দুর্ঘটনা পরবর্তী মানসিক ট্রমা কাটানোর বিষয়ে বিস্তারিত পড়ুন তাঁর লেখায়।

ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্টের অদম্য মেধাবী শিক্ষাবৃত্তি পাওয়া ডা. নাজমিন বেগম। তিনি বর্তমানে সিলেটের কুইন্স হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক বিভাগের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত।

সম্প্রতি উত্তরার মাইলস্টোন কলেজে ঘটে যাওয়া বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি সন্তানহারা বাবা-মায়ের প্রতি। যা ঘটে গেছে সেটা আমরা কোন কিছু দিয়ে পূরণ করতে পারব না। তবে এখন আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব যাতে এই মানসিক আঘাত থেকে আমাদের সন্তানদের রক্ষা করতে পারি।

শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য তার পরিবারে বিশেষ করে বাবা-মা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন। তাই সবার আগে বাবা-মা যেন অন্তত সন্তানের সামনে মানসিকভাবে দৃঢ় থাকেন। সন্তানের সামনে নেতিবাচক কথাবার্তা এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত দুর্ঘটনার ভিডিও এড়িয়ে চলতে পারেন। সম্ভব হলে কিছুদিনের জন্য দুর্ঘটনা সংঘটিত এলাকা বা মানুষ থেকে দূরে স্বাভাবিক পরিবেশে থাকতে পারেন।

তা ছাড়া খেয়াল রাখতে হবে শিশুদের মধ্যে পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (PTSD) বা দুর্ঘটনা পরবর্তী মানসিক বৈকল্য রোগের কোন লক্ষণ আছে কিনা। এই রোগের লক্ষণ কিছুদিন থাকাটা স্বাভাবিক। রোগের লক্ষণগুলো যেমন দুঃস্বপ্ন, ভয়, ঘুমাতে না পারা, যে কাজ বা খেলাধুলা করতে আগে পছন্দ করত সেগুলোর প্রতি অনীহা, মনোযোগ হারিয়ে ফেলা, দুর্ঘটনা মনে করে কষ্টদায়ক অনুভূতি প্রকাশ করা, যেখানে দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে ওই জায়গা বা ওই প্রতিষ্ঠানের সবাইকে এড়িয়ে যাওয়া। এই ধরনের লক্ষণসমূহ যদি এক মাসের বেশি স্থায়ী হয়, তাহলে অবশ্যই মনোরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে।

আর এই অবস্থায় অভিভাবকদের বলব যে, সন্তানের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে তার চিন্তা, অনুভূতি ও আচরণ লক্ষ্য করুন। তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলুন। শিশুদের উদ্বেগমুক্ত থাকতে সাহায্য করুন।