স্বপ্নের কোন সীমা নেই

নিজের এগিয়ে যাওয়ার গল্প বলছেন বর্ষা রানী। গত ৬ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে।

এসএসসিতে আমিই প্রথম আমার স্কুল থেকে জিপিএ-৫ অর্জন করি। পাড়া–প্রতিবেশী, স্যার–ম্যাডাম সকলেই খুব খুশি হন। কিন্তু আমার মনে তখন কলেজে ভর্তির টেনশন। তখন প্রথম আলোর তারাগঞ্জ প্রতিনিধি আমাকে নিয়ে সংবাদ করেন। তারপর ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী শিক্ষাবৃত্তি পাই। নতুন করে শক্তি পাই যে, আমিও পারব। কথাগুলো বলছিলেন অদম্য মেধাবী বর্ষা রানী।

বর্ষার বাবা ভ্যান চালাতেন, কিন্তু বয়স বেশি হওয়ায় আর চালাতে পারতেন না। ফলে মাকে অন্যের জমিতে কাজ করে সংসার চালাতে হতো। কিন্তু মায়ের আয়ে সংসার চলত না। তাই মায়ের সঙ্গে দিনমজুরি করতে হতো বর্ষাকেও। এতকিছুর পরও থেমে যাননি বর্ষা। কঠোর পরিশ্রম করে ২০১০ সালে মাধ্যমিক ও ২০১২ সালে উচ্চমাধ্যমিকে জিপিএ-৫ পান। নির্বাচিত হন ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী হিসেবে।

উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক (সম্মান) পর্যায়ে পান ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী তহবিলের শিক্ষাবৃত্তি। ২০১৮ সালে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগ থেকে স্নাতক (সম্মান) শেষ করেন। স্নাতকোত্তরও শেষ করে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগ থেকে। পড়াশোনা শেষে বর্ষা এখন লালমনিরহাট সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। পাশাপাশি ৪১তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।

কেন শিক্ষক হলেন জানতে চাইলে বর্ষা বলেন, ‘২০১০ সালে যখন ঢাকায় আমাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়, তখন মঞ্চে সবার সমানে বলেছিলাম আমি শিক্ষক হব। কারণ একজন শিক্ষকই পারেন সবার মধ্যে আলো ছড়াতে। আমিও শিক্ষার মাধ্যমে আলো ছড়াতে চাই।’

বর্ষা নিজেকে কোথায় দেখতে চান জানতে চাইলে বলেন, ‘স্বপ্নের কোন সীমা নেই। তবে ইচ্ছা থাকলে যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছানো সম্ভব। আমি সে লক্ষ্যেই কাজ করছি।‘