একজদ দক্ষ প্রকৌশলী হিসেবে নিজেকে দেখতে চান রাফিউল

বগুড়ার ধুনট উপজেলার বথুয়াবাড়ি গ্রামের অদম্য মেধাবী মো. রাফিউল ইসলাম।

ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী তহবিল থেকে শিক্ষাবৃত্তি পেয়ে এইচএসসি পর্যায়ে পড়াশোনা করেছেন বগুড়ার ধুনট উপজেলার বথুয়াবাড়ি গ্রামের ছেলে মো. রাফিউল ইসলাম। বগুড়ার ধুনট উপজেলার বথুয়াবাড়ি গ্রামের ছেলে মো. রাফিউল ইসলাম। এ বছর ভর্তি হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তি ইউনিটের অধিভুক্ত বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। টানাপোড়েনের সংসারে রাফিউলের এই সফলতা অন্যরকম মাত্রা যোগ করেছে। চার ভাই, এক বোন ও মা-বাবাকে নিয়ে রাফিউল হাসানদের পরিবার। স্কুলশিক্ষক বাবার আয়ে ভালোই চলছিল সংসার। কিন্তু ২০০৯ সালের ১২ অক্টোবর স্কুলশিক্ষক বাবা গোলাম মোস্তফা হঠাৎ মারা যান। পাঁচ ছেলেমেয়েকে নিয়ে রাফিউলের মা আরজিনা বেগম অথই সাগরে পড়ে যান। বাবার অবর্তমানে সন্তানেরা হারিয়ে ফেলে তাদের চলার পথ। কিন্তু স্বশিক্ষিত মা আরজিনা বেগম মনোবল হারাননি। অভাবের সংসারে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া শেখাতে মরিয়া হয়ে ওঠেন তিনি। অদম্য চেষ্টা ও দৃঢ় মনোবল আরজিনা বেগমের যমজ তিন সন্তানকে এগিয়ে নিয়েছে। আঁধার মাড়িয়ে ছড়িয়েছে আলো।

বাবাহীন টানাপোড়েনের সংসারে যমজ তিন ভাই শাফিউল হাসান, মাফিউল হাসান ও রাফিউল ইসলাম একসঙ্গে ২০২০ সালে এসএসসি পরীক্ষায় ধুনট সরকারি এনইউ পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পান। এ খবর প্রথম আলোয় প্রকাশ হলে আলোড়ন ফেলে দেয়। পরে তাদের পারিবারিক অবস্থা বিবেচনা নিয়ে যমজ তিনজনকেই ‘ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী’ শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়। এই বৃত্তি সহায়তা নিয়ে যমজ তিন ভাই বগুড়ার সরকারি শাহ্ সুলতান কলেজ থেকে মাফিউল ও রাফিউল জিপিএ-৫ এবং সাফিউল জিপিএ-৪.৯২ পেয়ে এইচএসসি পাস করেছেন।

মাফিউল শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে বিডিএস এবং সাফিউল খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবেশ ও মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। যমজ তিন ভাইয়ের সাফল্যে একালাবাসীসহ সকলেই অনেক খুশি হয়েছে। সাফল্য ধরে রাখায় মাফিউল হাসান ও রাফিউল ইসলামকে স্নাতক পর্যায়েও শিক্ষাবৃত্তি দেবে ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী তহবিল।

রাফিউল ইসলাম, ‘বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তি ইউনিটে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে অধ্যয়নরত আছি। আমি ভবিষ্যতে একজন তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশলী হিসেবে দেশ ও জনগণের সেবা করতে চাই। একজদ দক্ষ প্রকৌশলী হতে চাই। আপনাদের দোয়া ও সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।’