দারিদ্র্য জয় করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শফিউল, হতে চান শিক্ষক
রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার আমরুলবাড়ি পলিপাড়া গ্রামের অদম্য মেধাবী মো. শফিউল ইসলাম। নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম করেছেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে তৃতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছেন। অনুরণ-প্রথম আলো ট্রাস্টের শিক্ষাবৃত্তি সহায়তায় পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন। পড়াশোনা শেষে শিক্ষকতায় যুক্ত হওয়ার স্বপ্ন তাঁর। নিজ এলাকায় গিয়ে নতুনভাবে শিক্ষাকে ছাড়াতে চান জানালেন শফিউল।
আজকের এই আবস্থানে আসা শফিউলের জন্য সহজ ছিল না। অনেক প্রতিকূলতা মোকাবিলা করতে হয়েছে তাঁকে। যেদিন এসএসসির ফলাফল প্রকাশিত হয় সেদিন শফিউল ইসলাম অন্যের ধান মাড়াই যন্ত্রের শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলেন। সন্ধ্যায় সহপাঠী এক বন্ধু ফোন করে তাঁকে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়ার কথা জানান। শফিউল ২০১৯ সালে রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার উত্তর আমরুলবাড়ি উচ্চবিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পান। এইচএসসিতে ভর্তি হন বদরগঞ্জ সরকারি ডিগ্রি কলেজে। ভর্তির টাকা জোগাড় করেছেন ধানমাড়াই যন্ত্রে কাজ করে। অন্যের বাড়িতে টানা ২০ দিন দিনমজুরির কাজ করে সেই টাকা দিয়ে এসএসসিতে ফরম পূরণ করেছিলেন। পরিশ্রমের সাফল্যও পেয়েছেন হাতেনাতে। এইচএসসিতেও ভালো ফল করেন। ভর্তির সুযোগ করে নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরে প্রথম আলো ট্রাস্টের অদম্য মেধাবী তহবিলে আবেদন করলে শিক্ষাবৃত্তি প্রকল্পে যুক্ত করা হয়।
এই স্বপ্নবাজ তরুণেরা জীবনে নানা প্রতিকূলতা পাড়ি দিয়ে আজকের অবস্থানে পৌঁছেছেন। তাঁদের শিক্ষাবৃত্তি দেওয়ার পাশাপাশি তথ্য ও প্রযুক্তিতে দক্ষ করা এবং একাডেমিক কাজে সহায়তার জন্য ২৮ জুন প্রথম আলো কার্যালয়ে ল্যাপটপ প্রদান করা হয়েছে। অনুরণের সহায়তায় বৃত্তি পাওয়া ৮ জন শিক্ষার্থীকে দেওয়া হয়েছে এই ল্যাপটপ। পরীক্ষা থাকার কারণে দুজন উপস্থিত হতে পারেনি। কুরিয়ারের মাধ্যমে এই দুজনের ল্যাপটপ পাঠিয়ে দেওয়া হবে। মহতী উদ্যোগে প্রথম আলো ট্রাস্টের সঙ্গে যুক্ত থাকার জন্য অনুরণের সকল সদস্যকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।