অদম্য মেধাবী কাজী রাকিব হাসানে বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর থানার গোহালা গ্রামে। বাবা অসুস্থ, স্ট্রোক করেছেন, কাজ করতে পারেন না আর। মা গৃহিণী। চার ভাই তিন বোনের মধ্যে সবার ছোট রাকিব। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও পিছপা হননি রাকিব। কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে সম্প্রতি তিনি কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস সম্পন্ন করে ইন্টার্ন চিকিৎসক হিসেবে যুক্ত হয়েছেন। আজকের এই ডা. রাকিব হওয়ার পেছনে আছে নানা গল্প, আছে নানা প্রতিকূলতা।
এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে পুরান ঢাকার একটা মুদির দোকানে হিসাব রাখার কাজ নেন রাকিব। এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে জিপিএ-৫ পান। প্রথম আলোর একজন সাংবাদিক ওই দোকানে বাজার করতেন। সব শুনে তিনি আমার সব তথ্য নিয়ে যান এবং নিউজ করেন। পরে রাকিবের পারিবারিক অবস্থা ও অদম্য মেধাকে বিবেচনায় নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়। বৃত্তির জন্য অন্তর্ভুক্ত করা হলে দোকানের কাজ ছেড়ে নিয়মিত ক্লাস ও পড়াশোনা করেন। এইচএসসি পরীক্ষায়ও জিপিএ-৫ পান। পুনরায় বৃত্তি অব্যাহত থাকে। পরে ভালো করে পড়াশোনা করে কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস ভর্তির সুযোগ পান।
চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হলো, অনুভূতি কেমন? এ সম্পর্কে রাকিব বলেন, ‘স্কুলে পড়ার সময়ই স্বপ্ন দেখতাম, ডাক্তার হব। কীভাবে হব সেটা ভাবিনি, তবে চেষ্টা করেছি। প্রতিকূলতা অতিক্রম করে এমবিবিএস শেষ করেছি—এই অনুভূতি অসাধারণ।’
সফল হতে অদম্য মেধাবীদের পরামর্শ দিলেন রাকিব। রাকিব বলেন ‘ইচ্ছাশক্তি ও চেষ্টা থাকলে সবই সম্ভব। আমার যেমন চেষ্টা ছিল, তাই সম্ভবও হয়েছে। মানুষ চেষ্টা করলে সফল হবেই। আমার পাশে যেমন প্রথম আলো ট্রাস্ট, ব্র্যাক ব্যাংক ছিল, প্রধান শিক্ষকসহ আরও অনেকেই ছিলেন—কারণ আমার চেষ্টা ছিল। আসলে চেষ্টা করে যান, কীভাবে সফল হবেন আপনি জানবেনই না।’
ভবিষ্যৎ স্বপ্ন সম্পর্কে রাকিব বললেন, ‘ইন্টার্নশিপ শেষ করে বিসিএস দেব। সার্জারিতে উচ্চশিক্ষা নেব। একজন সফল সার্জন হব। এ জন্য আরও অনেক দূর এগিয়ে যেতে হবে আমাকে।’