পরিবেশ দূষণ রোধে উচ্চতর গবেষণা করতে চান সাদিয়াতুল জান্নাত

অদম্য মেধাবী সাদিয়াতুল জান্নাত।

সাদিয়াতুল জান্নাত এসএসসি পরীক্ষার পরপরই বাবাকে হারিয়েছেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন বাবা। কিন্তু পথ হারাননি অদম্য সাদিয়াতুল। পারিবারিক সংকটকে পাশ কাটিয়ে শিক্ষার পথ ধরে সফল হয়ছেন তিনি। ভর্তি পরীক্ষার বাধা পেরিয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করছেন তিনি।

ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় ভালো ছিলেন সাদিয়াতুল। ২০২০ সালে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে ভালো ফলের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু হঠাৎ ছন্দপতন। বাবা সাদিকুর রহমানের আকস্মিক মৃত্যুতে মুষড়ে পড়েন সাদিয়াতুল। পরিবারের হাল ধরে সাদিয়াতুলের মা মনোয়ারা বেগম। তাঁর শখের সেলাই মেশিনটি হয়ে দাঁড়ায় পরিবারের আয়ের একমাত্র উৎস। দিন–রাত সেলাই মেশিনে কাজ করেন মনোয়ারা বেগম। কিন্তু মাস শেষে পরিবারে আয় দাঁড়ায় সাকুল্যে দশ হাজার টাকা।

এই সামান্য টাকায় তিন ছেলেমেয়ের পড়ালেখা ও খাওয়ার খরচ কীভাবে মিটবে? এরই মধ্যে সাদিয়াতুল জান্নাতের এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন সাদিয়াতুল। একদিকে মেয়ের ভালো ফল, উজ্জ্বল ভবিষ্যতের হাতছানি আর একদিকে পরিবারের আর্থিক অনটন অকূলপাথারে পড়েন মা মনোয়ারা। প্রথম আলো ট্রাস্ট সাদিয়াতুল জান্নাতের পাশে দাঁড়ায়। ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্টের অদম্য মেধাবী শিক্ষাবৃত্তির জন্য মনোনীত হন সাদিয়াতুল। এই সহযোগিতার ফলে দ্বিগুণ উৎসাহে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করে সাদিয়াতুল জান্নাত। ফলও পান হাতেনাতে। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষাতেও পান জিপিএ-৫। এরপর ভর্তি যুদ্ধে মেধার স্বাক্ষর রেখে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির সুযোগ পান তিনি।

কথা হয় সাদিয়াতুল জান্নাতের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ আমি অনেক কষ্ট করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত এসেছি। ভবিষ্যতে স্বপ্ন দেখি পরিবেশ বিজ্ঞান নিয়ে  উচ্চতর পড়াশোনা করবো। পরিবেশ দূষণ রোধে উচ্চতর গবেষণা করবো। এই আত্মবিশ্বাস নিয়ে পড়াশোনা করছি।’

উল্লেখ্য, সাদিয়াতুল জান্নাতের স্বপ্নপূরণের পথে আবারও পাশে দাঁড়িয়েছে ‘ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট’। তিনি স্নাতক পর্যায়েও এই শিক্ষাবৃত্তির জন্য মনোনীত হয়েছেন।