মায়ের স্বপ্ন পূরন করলেন অদম্য মেধাবী পুলক কুমার মাহাতো

অদম্য মেধাবী পুলক কুমার মাহাতো।

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার পুলক কুমার মাহাতো বাবাকে হারিয়েছেন ছোটবেলায়। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন বাবা। কিন্তু পথ হারাননি অদম্য পুলক। অভাব– অনটন ও দুঃখ–কষ্টকে পাশ কাটিয়ে শিক্ষার পথ ধরে সফল হয়ছেন তিনি। ভর্তি পরীক্ষার বাধা পেরিয়ে ২০২৩–২০২৪ সেশনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন পুলক ।  

পুলক মাহাতোর বাবা জোগেশ চন্দ্র মাহাতো ২০০৭ সালে মারা যান। তখন পুলক মাহাতোর বয়স  পাঁচবছর, বড় ভাই অলক মাহোতোর বয়স দশ। আকস্মিক স্বামীকে হারিয়ে দুই সন্তানকে নিয়ে অকূল পাথারে পড়েন পুলকের মা বুলো রানী। পরিবারের বিপদের সময় বুলো রানী শক্ত হাতে পরিবারের হাল ধরেন। বাড়িতে থাকা সেলাই মেশিনটি হয়ে দাঁড়ায় পরিবারের আয়ের একমাত্র উৎস। উদয়াস্ত সেলাই মেশিনে কাজ করে দুই সন্তানকে উচ্চশিক্ষিত করার পণ করেন তিনি। বড় ছেলে বর্তমানে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে। ছোট ছেলে ২০২৩–২০২৪ সালের ভর্তি পরীক্ষায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শস্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে পুলক মাহাতো বলেন, ‘আমার মায়ের স্বপ্ন ছিলো আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বো। কিন্তু আর্থিক সঙ্কটের কারনে আমার পড়ালেখা প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। প্রথম আলো ট্রাস্ট সঙ্কটের সময় আমার পাশে দাঁড়ায়। ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী শিক্ষাবৃত্তির  জন্য আমি মনোনীত হই। মায়ের কঠোর পরিশ্রম ও অদম্য মেধাবী শিক্ষাবৃত্তির কারনেই আমি আজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছি।’  

২০২০ সালে রায়গঞ্জের নিমগাছি বহুমুখী  উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ–৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন পুলক। কিন্তু আর্থিক অসঙ্গতির কারনে কালেজে পড়া নিয়ে দেখা দেয় অনিশ্চয়তা। এসময় ‘ব্র্যাক ব্যাংক– প্রথম আলো ট্রাস্ট’ অদম্য মেধাবী শিক্ষাবৃত্তি পায় পুলক। বৃত্তিপ্রাপ্ত পুলক মাহাতো উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়েও ভালো ফলের ধারাবাহিকতা বজায় রাখেন।   ২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ– ৫  পান তিনি।

উল্লেখ্য, পুলক কুমার মাহাতোর স্বপ্ন পূরণের পথে আবারও পাশে দাঁড়িয়েছে ‘ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট’। তিনি স্নাতক পর্যায়েও এই শিক্ষাবৃত্তির জন্য মনোনীত হয়েছেন।