‘গরবিনী মা’ সম্মাননা পেলেন অদম্য মেধাবী বর্ষার মা

‘গরবিনী মা’ সম্মাননা গ্রহণ করছেন অদম্য মেধাবী তহবিল থেকে শিক্ষাবৃত্তিপ্রাপ্ত বর্ষা রানীর মা শ্রীমতী শৈল বালা।

সন্তানের বেড়ে ওঠা, প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পেছনে থাকে মায়েদের ত্যাগ, অক্লান্ত শ্রম ও অনুপ্রেরণা। মায়েদের এই অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে গরবিনী মা সম্মাননা দিয়ে আসছে রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। এ বছর এই সম্মাননা পেয়েছেন ১২ মা। এই ১২ জনের মধ্যে অন্যতম হলেন শ্রীমতী শৈল বালা। তিনি ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী তহবিল থেকে শিক্ষাবৃত্তিপ্রাপ্ত বর্ষা রানীর মা।

সম্মাননা গ্রহণের পর বর্ষা রানীর মা, বর্ষা রানী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা।

বর্ষা রানী রংপুর জেলার তারাগঞ্জ উপজেলার এক দরিদ্র পরিবারের মেয়ে। তাঁর বাবা ভ্যান চালাতেন, কিন্তু বয়স বেশি হওয়ায় আর চালাতে পারতেন না। ফলে মাকে অন্যের জমিতে কাজ করে সংসার চালাতে হতো। কিন্তু মায়ের আয়ে সংসার চলত না। তাই মায়ের সঙ্গে দিনমজুরি করতে হতো বর্ষাকেও। মা ও মেয়ের কঠোর পরিশ্রমের ফল আজকের এই বর্ষা রানী। তিনি ২০১০ সালে মাধ্যমিক ও ২০১২ সালে উচ্চমাধ্যমিকে জিপিএ-৫ পান। নির্বাচিত হন ‘ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী’ শিক্ষাবৃত্তির জন্য। এই শিক্ষাবৃত্তির সহায়তায় তিনি উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায় সম্পন্ন করেন। ৪১ তম বিসিএসে (নন-ক্যাডার) কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীন টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইনস্ট্রাক্টর (৯ম গ্রেড) পদে সুপারিশপ্রাপ্ত হন। বর্তমানে তিনি ঠাকুরগাঁও সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ইনস্ট্রাক্টর পদে কর্মরত। সরকারি চাকরি করে নিজে স্বাবলম্বী হয়েছে। ধরেছেন সংসারের হাল। বাবা-মায়ের হাতকে করেছেন শক্তিশালী।

‘গরবিনী মা’ সম্মাননা অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শ্রম উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বক্তব্য দেন। গত রোববার রাওয়া কনভেনশন সেন্টারে।

মায়ের সংগ্রামের কথা উল্লেখ করে বর্ষা রানী বলেন, ‘ছোটবেলায় সংসার চালাতে মানুষের বাড়িতে কাজ করতেন মা। নিজে না খেয়েও সন্তানের জন্য খাবার তুলে রাখতেন। মায়ের এই পরিশ্রম আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে সব সময়। আমি আমার মায়ের জন্য গর্বিত।’

উল্লেখ্য, গত রোববার মহাখালীর রাওয়া কনভেনশন সেন্টারে ‘গরবিনী মা-২০২৫’ সম্মাননা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিশ্ব মা দিবসে ১২ মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হয় সম্মাননা। এটি ছিল গরবিনী মা সম্মাননার যুগপূর্তি।