দারিদ্র্যকে জয় করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পা দিলেন ছাবিকুন্নাহার

অদম্য মেধাবী মোছা. ছাবিকুন্নাহার এ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন।

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার গুণগাঁতী এলাকার ভ্যানচালক শাহজাহান আলী ও গৃহিণী সোনাবান বেগমের তৃতীয় মোছা. ছাবিকুন্নাহার। তাঁর বড় দুই বোন বিবাহিত। একমাত্র ভাই বিয়ে করে আলাদা থাকে। নিম্ন আয়ের সংসারের মেয়েটি তাই নিজের পড়ালেখার পাশাপাশি নিচের শ্রেণিতে পড়ুয়াদের টিউশনি করিয়ে খরচ চালাতো। এভাবে কঠোর পরিশ্রম করে ২০২০ সালে এসএসসি পরীক্ষায় উপজেলার ধানঘরা উচ্চবিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগে সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।বাধা পেরিয়ে ভালো ফল করায় প্রথম আলোর রায়গঞ্জ প্রতিনিধি তাঁকে নিয়ে প্রতিবেদন পাঠান। পড়াশোনার প্রতি তাঁর অদম্য ইচ্ছা, ভালো ফল ও পারিবারিক অবস্থা বিবেচনায় ‘ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী তহবিল’ থেকে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়। এই বৃত্তি নিয়ে এইচএসসিতে ভর্তি হন রায়গঞ্জ উপজেলা সদর ধানগড়া মহিলা ডিগ্রি কলেজের মানবিক বিভাগে।

২০২২ সালে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় মানবিক বিভাগ থেকে সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়ে সাফল্য ধরে রাখেন তিনি। তাঁর এই সফলতায় তাঁকে স্নাতক পর্যায়েও শিক্ষাবৃত্তির জন্য নির্বাচন করে এই তহবিল। স্নাতক পর্যায়ে ৪ বছর ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী তহবিল শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করবে।

এদিকে ২০২৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায়ও সাফল্য দেখিয়েছেন ছাবিকুন্নাহার। বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ১৮১ তম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় কলা বিভাগে ৪৯ তম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৬৮ তম হন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা বিভাগে ভর্তি হন।

ছাবিকুন্নাহার জানান, ‘ছোট থেকেই পড়াশোনা করতে ভালো লাগত আমার। যার কারণে সব পরীক্ষাতেই ভালো করার প্রচেষ্টা থাকত। ফলে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী জিপিএ-৫ পেয়েছি, জেএসসিতে জিপিএ-৫ সহ সাধারণ বৃত্তি পাই। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষাতেও জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হই। পড়ালেখা করে বিসিএস দিয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হতে চাই এবং সমাজ থেকে যৌতুক নির্মূলে কাজ করতে চাই।’