অদম্য মেধাবী মো. রুবেল ইসলামের গ্রামের বাড়ি নীলফামারী জেলার ডোমার থানায়। নিজেদের জমি জমা বলতে কিছুই নেই। তিন ভাই বোনের মধ্যে রুবেল সবার বড়। ছোটবেলা থেকেই বাবার সঙ্গে গ্রামের হাটে ইজারাদের পণ্য ওজন করা ও হিসাব নিকেশের কাজ করতেন। পাশাপাশি পড়াশোনা করতেন। এভাবে ২০১০ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। পরে তাঁর পারিবারিক অবস্থা ও অদম্য মেধাকে বিবেচনায় নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়। দুই বছর দেওয়া হয় এই শিক্ষাবৃত্তি। এই শিক্ষাবৃত্তি পেয়ে এইচএসসিও আবার জিপিএ-৫ পেয়ে সাফল্য ধরে রাখেন। ধারাবাহিক সফলতায় তাঁকে পুনরায় স্নাতক (সম্মান) পর্যায়ের জন্য শিক্ষাবৃত্তির আওতায় নিয়ে আসা হয়। বৃত্তি সহায়তা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজ থেকে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক শেষ করেছেন। এখন ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে মেট্রোপলিটন স্কুল অ্যান্ড কলেজে পদার্থবিজ্ঞানের প্রভাষক পদে শিক্ষকতা করছেন।
সফলতার পেছনের গল্প করতে গিয়ে বলেন, ‘হাটে কাজ করতাম, পড়াশোনা করতাম। এটা করেও ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত আমার রোল এক ছিল। ভালো ছাত্র হওয়ায় এবং আমার পরিবারের অবস্থা বিবেচনায় অনেক শিক্ষক আমাকে বিনা বেতনে পড়াতেন। তাঁদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। এভাবে সবার সহায়তায় টেস্ট পরীক্ষা দিলাম, এসএসসি পরীক্ষা দিলাম। ফলাফলও ভালো করলাম। কিন্তু বিধি বাম। কীভাবে সামনের পড়াশোনা চালব সেটা নিয়ে খুবই চিন্তিত ছিলাম। এ সময় প্রথম আলোর নীলফামারী প্রতিনিধি আমার বাড়িতে আসলেন, আমাকে নিয়ে রিপোর্ট করলেন। সেই রিপোর্টের কারণে আমার স্বপ্ন পূরণের পথ খুঁজে পাই।’
শিক্ষক হিসেবে অনুভূতি কেমন জানতে চাইলে রুবেল জানান, ‘খুবই উপভোগ করছি শিক্ষকতা। আমার শিক্ষার্থীদের আমার জীবন থেকে নেওয়া বাস্তব অভিজ্ঞতাগুলো শেয়ার করি। কোনো প্রতিকূলতাই যে বাধা তৈরি করতে পারে না, সেটা বলি। শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করি।’