ফেনী জেলার কুটিরহাট গ্রামের অদম্য মেধাবী লিঙ্কন চন্দ্র ঘোষ। ছোট থেকে নানা প্রতিকূলতা দেখেছেন। অদম্য সাহস নিয়ে এগিয়ে গেছেন। পড়াশোনার প্রতি তাঁর অদম্য ইচ্ছা ও কঠোর পরিশ্রমের কারণে হয়েছেন সফল। লিঙ্কন চন্দ্র ঘোষ ৪০ তম বিসিএসে (শিক্ষা ক্যাডার) গেজেটভুক্ত হয়ে লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে আ স ম আবদুর রব সরকারি কলেজে প্রভাষক পদে শিক্ষকতা করছেন। এর আগে তিনি ২০১৯ সালে কন্ট্রোলার জেনারেল ডিফেন্স ফাইন্যান্স অডিটর হিসেবে এবং ২০২০ সালে জনতা ব্যাংক লিমিটেডে সিনিয়র অফিসার পদে কর্মরত ছিলেন।
লিঙ্কন ঘোষ তাঁর সফলতা পেছনের গল্প জানাতে গিয়ে বলেন ‘আমার পরিশ্রম ও অনেকের সহযোগিতায় এগিয়ে যেতে পেরেছি। সফ হতে পেরেছি। যেমন প্রথম আলোকে আমার পাশে পাই ২০১০ সালে যখন আমার এসএসসি রেজাল্ট হয়। আমার পরিবারে আর্থিক অসচ্ছলতা ছিল। বাবা অসুস্থ। পরিবারের পক্ষে আমার পড়াশোনা করানো কষ্টসাধ্য ছিল। বাবা-মার ইচ্ছা শক্তিটা ছিল কিন্তু আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে পারতেন না তাঁরা। ২০১০ সালে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়ার পর প্রথম আলো স্থানীয় প্রতিনিধি আমাকে খুঁজে বের করেন। আমাকে নিয়ে প্রতিবেদন লেখেন। প্রতিবেদন দেখে ‘ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী’ শিক্ষাবৃত্তির জন্য মনোনীত করা হয় আমাকে। এরপর আমার পথ চলা আরও সহজ হয়ে যায়। এ বৃত্তি পেয়ে পরবর্তীতে ২০১২ সালে এইচএসসিতে কৃতিত্ব ধরে রেখে স্নাতক পর্যায়েও বৃত্তি পাই। বৃত্তি পাওয়ার পর নিশ্চিন্ত মনে পড়াশোনা চালাই। ভালো করে পড়াশোনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমসে ভর্তির সুযোগ অর্জন করি।’
তিনি আরও জানালেন, আসলে পড়াশোনা করা এবং এই যে চাকরি করছি এখানে প্রথম আলোর অবদান অনেক বেশি। এ জন্য ব্র্যাক ব্যাংক ও প্রথম আলোর কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ। তাদের অনেক ধন্যবাদ। তবে একটা কথা সত্যি, পরিশ্রম করলে সফলতা আসবেই।’
বর্তমান অদম্য যারা পড়াশোনা করছে, তাদের জন্য লিঙ্কনের পরামর্শ হলো, ইচ্ছা ও মনোবল শক্ত থাকলে কোন প্রতিকূলতাই বড় কোন বাধা হতে পারে না। প্রবল ইচ্ছা সবচেয়ে বড় বিষয়। মানসিকভাবে শক্ত থাকতে হবে। মাঝে মাঝে মনে হতে পারে যে, কোন কিছুই আমার অনুকূলে নেই। আসলে নিজের ইচ্ছা ও মনোবল ঠিক থাকলে এগুলো কোনো বিষয়ই না।