এফসিপিএস পার্ট-১ পাস করলেন অদম্য গৌরব

অদম্য মেধাবী ডা. গৌরব মজুমদার বিক্রম রোগী দেখছেন।

অদম্য মেধাবী গৌরব মজুমদার বিক্রম ‘ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী তহবিল’ থেকে শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে এইচএসসি ও এমবিবিএস পর্যায়ে পড়াশোনা করেছেন। তিনি শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (বরিশাল) থেকে এমবিবিএস পাস করে ৪২ তম বিশেষ বিসিএসে (স্বাস্থ্য) সহকারী সার্জন হিসেবে সুপারিশপ্রাপ্ত হন। চূড়ান্ত গেজেটে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যোগদান করেন গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। পরে একই উপজেলার সরিকল ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সহকারী সার্জন হিসেবে বদলি হন। বর্তমানে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত। স্বপ্ন তাঁর নিউরোমেডিসিন বিশেষজ্ঞ হওয়ার। সেই লক্ষ্যেই এফসিপিএস কোর্সে যোগদানের জন্য পার্ট-১ পরীক্ষা দিয়েছিলেন। সম্প্রতি প্রকাশিত ফলে এফসিপিএস (নিউরোমেডিসিন) পার্ট-১ পাস করেছেন তিনি।

পাস করার আনন্দে ফেসবুকে অনুভূতি প্রকাশ করেন গৌরব। তিনি লেখেন, ‘ঈশ্বর আমাকে এর যোগ্য মনে করেছেন, এ জন্যই আমার কর্ম সার্থক হয়েছে। ২০২৪ এর পরিশ্রমকে তিনিই সার্থক করেছেন। ২০২৫ শুরু হলো একটি সুসংবাদ দিয়ে। শতসহস্র প্রণাম মা-বাবার প্রতি, যারা আমার পাগলামি রুটিনকে প্রশ্রয় দিয়েছেন। তারা বিরক্তও হয়েছেন। কিন্তু মুখ বুজে সহ্য করেছেন। তাদের ঘুমের বারোটা বাজছে আমার জন্য। ক্ষমা আর কত বার চাওয়া যায়। কলিগরা অনেক সাপোর্ট দিয়েছেন। তাদের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা। বন্ধু-বান্ধব অনেক সাহস দিয়েছে। সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।’

অদম্য মেধাবী ডা. গৌরব মজুমদার বিক্রম রোগী দেখছেন।

গৌরবের বাবা-মা অনেক যুদ্ধ করেছেন সংসার চালতেন। কিন্তু গৌরবকে বুঝতে দেননি কখনো। গৌরবের বাবা মূলত টিউশনি করে সংসার চালাতেন, মা সেলাই কাজ করতেন। গৌরব যখন টেনে পড়েন তখন তাঁর বাবা এক গাড়ি দুর্ঘটনায় মারাত্মক আঘাতে দীর্ঘ মেয়াদে শয্যাশায়ী ছিলেন। থমকে পড়ে সবকিছু। সংসার কীভাবে চলবে, পড়াশোনাই বা কীভাবে চলবে। ওই সময়টাতেই গৌরব স্থির করেন, যেভাবেই হোক ভালো ফল করতে হবে।

গৌরব মজুমদার বলেন, ‘অভাবের মধ্য দিয়েও আমি এসএসসিতে ভালো ফল করি এবং অদম্য মেধাবী শিক্ষাবৃত্তির জন্য মনোনীত হই। এটা আমাকে দারুণভাবে সাহায্য করে। এখন আমি নিজে স্বাবলম্বী। আমি পরিবারের দেখাশোনা, বাবা-মায়ের চিকিৎসাসহ সবকিছু সামলে নিচ্ছি। পাশাপাশি মানুষের সেবা করছি। আমার জন্য দোয়া প্রার্থনা করবেন যেন, বিশেষজ্ঞ হয়ে মানুষকে আরও উন্নত চিকিৎসা সেবা দিতে পারি।’