অভাবকে জয় করে এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পবিত্র রায়
তারাগঞ্জ সদর থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ বাহাগিলি বাড়াইপাড়া গ্রামে পবিত্রদের বাড়ি। তাঁদের বাবা ডালিম রায় দৈনিক ৪০০ টাকা মজুরিতে তারাগঞ্জের একটি দোকানে কর্মচারীর কাজ করেন। মা সোনা রানী গৃহিণী। পবিত্র রায় ২০২০ সালে তারাগঞ্জ ও/এ সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে নীলফামারী সরকারি কলেজে ভর্তি হন। ওই কলেজ থেকে ২০২২ সালে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পান। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় তাঁর মেধাক্রম হয় ১৩০৩। তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।
পবিত্র রায় ও শুভ রায় দুই ভাই। দিদা, মাসহ পাঁচ সদস্যের সংসার তাঁদের। দিনমজুর বাবা ডালিম রায়ের একার আয়ে সংসার চলে। অভাবের সংসারে যেখানে দুইবেলা ভালো করে খেয়ে বাঁচা কষ্টকর, সেখানে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া দুরূহ। তবে দমে যাননি পবিত্র রায়। অনুরণ-প্রথম আলো ট্রাস্টের শিক্ষাবৃত্তি সহায়তায় পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন।পবিত্রদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘেরা টিনের দোচালা দুটি ঘর। টিনের চালে জং ধরেছে, সেই ফুটো দিয়ে যাতে বৃষ্টির পানি ভেতরে ঢুকতে না পারে, সে জন্য চালের ওপর পলিথিন মুড়ে দেওয়া হয়েছে। ঘরের বাঁশের খুঁটিগুলো বেশ নড়বড়ে, বেড়া ভেঙে ফুটো হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়।
স্বপ্নবাজ পবিত্র রায় জীবনে নানা প্রতিকূলতা পাড়ি দিয়ে আজকের অবস্থানে পৌঁছেছেন। তাঁদের শিক্ষাবৃত্তি দেওয়ার পাশাপাশি তথ্য ও প্রযুক্তিতে দক্ষ করা এবং একাডেমিক কাজে সহায়তার জন্য ২৮ জুন প্রথম আলো কার্যালয়ে ল্যাপটপ প্রদান করা হয়েছে। অনুরণের সহায়তায় বৃত্তি পাওয়া ৮ জন শিক্ষার্থীকে দেওয়া হয়েছে এই ল্যাপটপ। মহতী উদ্যোগে প্রথম আলো ট্রাস্টের সঙ্গে যুক্ত থাকার জন্য অনুরণের সকল সদস্যকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।