‘এই অবদান কখনো ভুলতে পারব না’

প্রথম আলো ট্রাস্ট যে কটি কার্যক্রম পরিচালনা করে তার মধ্যে অদম্য মেধাবী তহবিল অন্যতম। এই তহবিল থেকে অসচ্ছল মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়ে থাকে। এই তহবিল থেকে ২০২১ পর্যন্ত মোট ১ হাজার ১৩৩ জন অদম্য মেধাবী শিক্ষাবৃত্তি পেয়েছে। এই অদম্যদের একজন মো. সোহানুর রহমান লিখেছেন প্রথম আলোর ২৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর নিজের ভাবনা।

প্রথম আলো ট্রাস্টের অদম্য মেধাবী শিক্ষাবৃত্তি প্রাপ্ত মো. সোহানুর রহমান।

প্রথমেই জানাই প্রিয় প্রথম আলোর ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আন্তরিক অভিনন্দন। প্রথম আলো নামটাই যেন তার পরিচয় দিয়ে দেয়। যেমন সূর্যের আলোতে সকাল হয়, ঠিক তেমনি প্রথম আলোর মাধ্যমে ৭৬ লাখ পাঠকের দিন শুরু হয়।

আমি মো. সোহানুর রহমান, প্রথম আলো ট্রাস্টের শিক্ষাবৃত্তি প্রাপ্ত অদম্য মেধাবী (এসএসসি-২০১৯)। আমি শুধু একটা বিষয় বলতে চাই, প্রথম আলো ট্রাস্টের অদম্য মেধাবী শিক্ষাবৃত্তি সবার থেকে ভিন্ন। অন্য শিক্ষাবৃত্তিতে যেখানে আগে থেকে আবেদন করতে হয়, সেখানে প্রথম আলো ট্রাস্টের অদম্য মেধাবী তহবিল সারা দেশ থেকে অসহায় মেধাবী শিক্ষার্থীদের নিজ উদ্যোগে শিক্ষাবৃত্তি দিয়ে থাকে। এ জন্য প্রথম আলো সবার থেকে আলাদা।

প্রথম আলোর এই অবদান কখনো ভুলতে পারব না। সবশেষে একটা কথায় বলতে চাই প্রথম আলো চিরজীবী হোক।

আমার জন্মের তিন মাসের মধ্যেই আমার বাবা ইন্তেকাল করেন। আমার মা জীবিকার তাগিদে আমার বয়স যখন নয় মাস, তখন ঢাকায় গার্মেন্টসে কাজ করতে যায়। আমি অনেক কষ্ট করে মামার বাড়িতে বড় হয়েছি। আমি পিইসি, জেএসসি, এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাই। কিন্তু আমি এসএসসি পরীক্ষার পরে কলেজে ভর্তি হব, এমন সামর্থ্য আমার পরিবারের ছিল না। তখনই আশার আলোর মতো পথ দেখায় প্রথম আলো তথা প্রথম আলোর রিপোর্টার।

প্রথম আলো ট্রাস্টের অদম্য মেধাবী শিক্ষাবৃত্তি প্রাপ্ত মো. সোহানুর রহমান।

আমার অসহায়ত্বের কথা জানতে পেরে আমাকে প্রথম আলো ট্রাস্টের অদম্য মেধাবী শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা করে দেয়। এ জন্য প্রথম আলোর কাছে আমি সারা জীবন কৃতজ্ঞ থাকব। তারা অধ্যাপক ডা. শিরীন আক্তার ম্যাডামের মাধ্যমে আমাকে এইচএসসি পর্যায়ে দুই বছর শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা করে দেন। এই বৃত্তিটা না হলে হয়তো আমার পড়াশোনাই হতো না।

আমি এসএসসি পরীক্ষার পরে কলেজে ভর্তি হব, এমন সামর্থ্য আমার পরিবারের ছিল না। তখনই আশার আলোর মতো পথ দেখায় প্রথম আলো তথা প্রথম আলোর রিপোর্টার।

যাই হোক আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি এইচএসসিতেও জিপিএ-৫ পাই এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি। প্রথম আলোর এই অবদান কখনো ভুলতে পারব না। সবশেষে একটা কথায় বলতে চাই প্রথম আলো চিরজীবী হোক।