‘ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী তহবিল’ থেকে শিক্ষা বৃত্তিপ্রাপ্ত নূর ইসলাম নাহিদ সুনামগঞ্জের বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। এ খবর জানাতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়লেন নাহিদ। বললেন, ‘প্রথম আলো ট্রাস্টের সহযোগিতায় এত দূর এসেছি। তা না হলে লেখাপড়া চালিয়ে নিতে পারতাম কিনা জানি না। মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছি এতে আমি আনন্দিত। আমাকে মেডিকেলে পড়ার ৫ বছরও শিক্ষাবৃত্তি দেবে এই তহবিল। আমি নিশ্চিতে ডাক্তারি পড়া চালিয়ে যেতে পারব।’
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়ায় নাহিদের গ্রামের বাড়ি। ২০১০ সালে নাহিদের বয়স যখন পাঁচ বছর, তখন তাঁর বাবা নূর আলম সিদ্দিকী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মারা যান। দুই ভাই এক বোনের সংসারে নাহিদ সবার ছোট।
এদিকে স্বামীর মৃত্যুর পর চোখে অন্ধকার দেখতে থাকেন নাহিদের মা শিল্পী বেগম। তিন ছেলে-মেয়ে নিয়ে সৈয়দপুর শহরের গোলাহাট মহল্লার একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন। সংসারে খরচ মেটাতে গোলাহাট স্কুল ও কলেজে সামান্য আয়ার চাকরি নেন তিনি। তখন থেকেই চলতে থাকে ছেলে-মেয়েদের মানুষ করার লড়াই। ছেলে নাহিদকে ভর্তি করেন শহরের লায়ন্স স্কুল ও কলেজে। এরই মধ্যে দুই বোনের বিয়ে হয়ে যায়।
এদিকে, পড়াশোনায় ভালো নাহিদের এসএসসি পর্যন্ত পাশে ছিলেন হাজারীহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ লুৎফর রহমান চৌধুরী। তাঁর সহযোগিতায় ২০২১ সালে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন নাহিদ। এ সময় তাঁকে নিয়ে প্রথম আলোয় প্রতিবেদন পাঠান সৈয়দপুর প্রতিনিধি। পরে নাহিদের সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় ‘ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী শিক্ষাবৃত্তির’ আওতায় নেওয়া হয়। বৃত্তি সহায়তায় ভালো করে পড়াশোনা করে ২০২৩ সালে অনুষ্ঠেয় এইচএসসি পরীক্ষায়ও সাফল্য ধরে রাখেন। জিপিএ-৫ পান। তাঁর এই সাফল্যে পুনরায় তাঁকে স্নাতক পর্যায়েও শিক্ষাবৃত্তির আওতায় নেয় ‘ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী তহবিল। মেডিকেলের ৫ বছর এই বৃত্তির আওতায় থাকবেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘মায়ের স্বপ্ন ছিল আমি যেন মেডিকেলে চান্স পাই। মায়ের কথা রেখেছি। আমার প্রত্যাশা, আমি যদি চিকিৎসক হতে পারি তাহলে গরিবের ডাক্তার হব। অসহায় শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াব। যেভাবে আমার পাশে দাঁড়িয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট।