দারিদ্র্য ও প্রতিবন্ধিতা দমাতে পারেনি দিপা নন্দীকে

শারীরিক প্রতিবন্ধী দিপা নন্দী এখন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী।

খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী দিপা নন্দী। দিপা প্রতিবন্ধী হওয়ায় আড়াই বছর বয়সে দিপা ও তাঁর মাকে ঘর থেকে বের করে দেন বাবা সুভাস নন্দী। সেই থেকে দিপার মা পপি দাশ মানসিক ভারসাম্যহীন। এরপর দিপা ও তাঁর মায়ের স্থান হয় মামা বাড়িতে। মামা সঞ্জয় দাশ ও মামি চুমকি বিশ্বাসের অভাবের সংসারে দিপার বেড়ে ওঠা।

কিন্তু দারিদ্র্য ও শারীরিক প্রতিবন্ধিতা দিপাকে থামাতে পারেনি। কঠোর পরিশ্রম করে দিপা ২০১৯ সালে পানছড়ি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাস করেন। প্রথম আলোর খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি দিপাকে নিয়ে প্রতিবেদন পাঠান। পরে দিপার পারিবারিক অবস্থা ও অদম্য মেধাকে বিবেচনায় নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়। বৃত্তির জন্য অন্তর্ভুক্ত করা হলে অনেকটা নির্ভার হন, নিয়মিত ক্লাস ও পড়াশোনা করেন। পানছড়ি সরকারি ডিগ্রি কলেজের ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে এইচএসসি পরীক্ষায়ও জিপিএ-৫ পান দিপা। পুনরায় অব্যাহত থাকে ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী শিক্ষাবৃত্তি। পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ আরও বেড়ে যায় দিপার। ভালো করে পড়াশোনা করে ২০২১-২২ সেশনে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ভর্তির সুযোগ পান।

শারীরিক প্রতিবন্ধী দিপা নন্দী এখন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী।

দিপা শুধু এসএসসি বা এইচএসসিতেই নয় সমাপনী ও জেএসসি পরীক্ষায়ও পেয়েছে জিপিএ-৫। চতুর্থ শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুল ও সপ্তম শ্রেণিতে পেয়েছে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ বৃত্তি।

দিপার মামি চুমকি বিশ্বাস বলেন, ‘আড়াই বছর বয়স থেকেই দিপাকে মেয়ের মতো করে মানুষ করছি। ছোট থেকে মেয়েকে ভালো খাওয়াতে পারিনি, একটি ভালো পোশাক দিতে পারিনি। পড়াশোনার প্রতি প্রচণ্ড আগ্রহ তাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তবে ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট পাশে আছে বলে এগিয়ে যাওয়া সহজ হচ্ছে।’