ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন দেখেন অদম্য সাজ্জাদ

অদম্য মেধাবী সাজ্জাদ হোসেন।

অদম্য মেধাবী সাজ্জাদ হোসেন বাবার স্বপ্নপূরণ করেছেন। ২০২৪ সালের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ থেকে জিপিএ–৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি। সাজ্জাদ হোসেনের বাবা আক্কাস আলী পেশায় গাড়ি চালক। তিনি বিশ্বাস করতেন তাঁর বড় ছেলে উচ্চ মাধ্যমিকেও ভালো ফল করবেন।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার খলিলগঞ্জের বাসিন্দা সাজ্জাদ বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। মাধ্যমিক পরীক্ষাতেও জিপিএ–৫ পেয়ে উত্তীর্ণ এই কৃতি শিক্ষার্থী বলেন, ‘বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পাশ করেছি। কিন্তু আর্থিক অসঙ্গতির কারণে উচ্চমাধ্যমিকে গ্রুপ পরিবর্তন করে মানবিক বিভাগে ভর্তি হতে বাধ্য হয়েছি। এই কষ্ট আমি কোনদিন ভুলব না। প্রথম আলো ট্রাস্টের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। প্রতিষ্ঠানটি আমাকে কলেজ পর্যায়ে শিক্ষা বৃত্তি দিয়েছে। ভবিষ্যতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন দেখি।’

সাজ্জাদ হোসেনের বাবা আক্কাস আলী ছিলেন দিনমজুর। প্রতিদিন ঠিকঠাক কাজ পেতেন না তিনি। সাজ্জাদ তখন সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। দুই ভাই, এক বোনের মধ্যে সাজ্জাদ সবার বড়। এ অবস্থায় সাজ্জাদের পরিবার সিদ্ধান্ত নেয়, পরিবারের বড় সন্তান হিসেবে পড়াশোনা ছেড়ে তাকেও আয়রোজগারের পথ বেছে নিতে হবে। তবে সেই সময় সাজ্জাদের বাবা পেশা বদল করে ট্রাকের চালকের সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন। ফলে সাজ্জাদকে তখন পড়াশোনা ছেড়ে দিতে হয়নি। তবে সাজ্জাদকে একা পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হয়েছে। সাজ্জাদের বন্ধুরা সবাই স্কুলের পাশাপাশি প্রাইভেট পড়ত। কিন্তু অর্থের অভাবে সাজ্জাদের সেই সুযোগ ছিল না। এর ফলে উচ্চমাধ্যমিকে বিভাগ পরিবর্তন করে মানবিক বিভাগে ভর্তি হন তিনি। বর্তমানে সাজ্জাদের বাবা ট্রাক চালক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।   

উল্লেখ্য, এম এম ইস্পাহানি লিমিটেডের পরিচালক জাহিদা ইস্পাহানির সহায়তায় প্রথম আলো ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় কলেজ পর্যায়ে সাজ্জাদ হোসেনকে শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হয়।